কলকাতার সিনেমা-জগৎ হারালো এক অনন্য শিল্পীকে। বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় আজ চলে গেলেন, রেখে গেলেন এক দীর্ঘ অভিনয়জীবনের স্মরণীয় অধ্যায়।
প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১:২৬:৩১
কলকাতার চলচ্চিত্র জগৎ আজ শোকাহত। দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের অধিকারী বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় আর নেই। বয়স হয়েছিল ৮১। তিনি দীর্ঘদিন নানা অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে গেছেন, তবে তাঁর অভিনয় কখনো দূর হয়নি দর্শকের হৃদয় থেকে। বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সেই অভিনেত্রী, যিনি ছোট চরিত্রেও নিজের উপস্থিতি দিয়ে পুরো দৃশ্যকে শক্তিশালী করতে পারতেন। তাঁর অভিনয় ছিল প্রাকৃতিক, সংযত এবং সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল। অপরাজিতা, প্রতিশোধ এবং মোহনা-মন মতো ছবিতে তাঁর পার্শ্বচরিত্রগুলো আজও দর্শকের মনে অমলিন।
"বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সেই শিল্পী, যিনি নিঃশব্দেও গল্প বলতে পারতেন" - রণজিৎ দত্ত, চলচ্চিত্র সমালোচক
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাসন্তীর অভিনয়ধারা অনেকটা বিশ্বখ্যাত অভিনেত্রী হেলেন মিরেন বা ইংরিড বার্গম্যানের মতো-যারা প্রতিটি চরিত্রকে নিজের ছাপ দিয়ে দর্শকের মনে রেখে গেছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান অনন্য। তিনি প্রমাণ করেছেন, পার্শ্বচরিত্রও মূল গল্পের প্রাণ হতে পারে। তাঁর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতার চলচ্চিত্রপাড়ার বহু নামী পরিচালকেরা। তারা উল্লেখ করেছেন, “বাসন্তীর মতো শিল্পীরা আমাদের শেখান যে চলচ্চিত্র কেবল বিনোদন নয়, এটি মানবিক অনুভূতি ও জীবনের প্রতিচ্ছবি।” বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়ের জীবন ও ক্যারিয়ার প্রমাণ করে, একজন শিল্পীর সত্যিকারের শক্তি তাঁর উপস্থিতি এবং পরিশ্রমে নিহিত। যদিও পর্দায় তাঁর শেষ দৃশ্য অনেক বছর আগে ধারণ করা হয়েছে, দর্শকের মনে বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় চিরকাল জীবন্ত। বাংলা চলচ্চিত্র আজ একজন কিংবদন্তিকে হারাল। তাঁর নীরব শক্তি, সংযম ও অভিনয়শৈলী নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় আর নেই, কিন্তু তাঁর প্রতিটি চরিত্র, সংলাপহীন মুহূর্ত ও চোখের ভাষা আজও আমাদের সঙ্গে থাকবে।