রাষ্ট্রনৈতিক উন্নয়ন ও সংহতির মাধ্যমে দেশের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার গুরুত্বের উপর জোর
প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২:৩৮:২০
গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং ক্ষমতা দেশের জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতেই মনোযোগী। মালয়েশিয়ায় বুধবার (১৩ আগস্ট) বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি, যাতে জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।’
একই দিনে কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউকেএম) মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের কাছ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির সনদ গ্রহণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। সামাজিক ব্যবসায় অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বনন্দিত এই অর্থনীতিবিদকে সম্মানে ভূষিত করে ইউকেএম। ডিগ্রি গ্রহণের পর বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘এ এক বিশাল সম্মান এবং চমৎকার এক অনুষ্ঠান। আমি এই ডিগ্রিটি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে গ্রহণ করছি। এই স্বীকৃতি তরুণদের স্বপ্ন পূরণের জন্য আমার দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে একটি আরও বলিষ্ঠ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এমন একটি বিশ্বের স্বপ্ন দেখি, যেখানে মানুষ মর্যাদা ও স্বাধীনতার সঙ্গে বসবাস করবে এবং সবাই বৈষম্য ও ভয়ভীতি থেকে মুক্ত থাকবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘গত বছর বাংলাদেশের তরুণরা সাহসিকতার সঙ্গে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। দেশের শত শত শিক্ষার্থী ও তরুণ একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য প্রাণ দিয়েছে, যাতে সবাই মর্যাদার সঙ্গে, ভয়ভীতি, বৈষম্য ও অবিচারমুক্তভাবে বসবাস করতে পারে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘তরুণদের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান দেশের জাতীয় পরিচয়ে নতুন অর্থ এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন আশার সঞ্চার করেছে। আজ আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত, যেখানে শাসন হবে ন্যায়ভিত্তিক, অর্থনীতি হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রত্যেকে সমান সুযোগ পাবে। আমাদের সরকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে মনোযোগী।’
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা। পরে ইউকেএম ও ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার নেটওয়ার্কের যৌথ আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় নেটওয়ার্কের সদস্যদের সঙ্গে তার একটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি বইতে তিনি স্বাক্ষর করেন এবং নেগেরি সেমবিলানের রাজা (ইউকেএমের চ্যান্সেলর) সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাতে অংশ নেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে দেশে সফরে রয়েছেন।