গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ বিমান ও স্থল হামলা অব্যাহত রয়েছে।
প্রকাশিত : ১৮ জুন ২০২৫, ৫:৪৭:৩৯
গাজা, ১৮ জুন:
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ বিমান ও স্থল হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৯ জন ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে রয়েছে নারী ও শিশুও। হামলায় বহু বসতবাড়ি, হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্র গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান সহিংসতায় এখন পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ, যাদের অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
ধ্বংসস্তূপে আর্তনাদ:
গাজা সিটির কেন্দ্রস্থলে একটি আবাসিক এলাকায় চালানো বিমান হামলায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় এক মানবাধিকার সংস্থা। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শিশুদের মৃতদেহ উদ্ধার করতে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবকদের। সেখানেই কাঁদছিলেন এক বাবা, যিনি হারিয়েছেন তার স্ত্রী ও তিন সন্তানকে।
ইসরায়েলের অবস্থান:
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) দাবি করেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল হামাসের গোপন সুড়ঙ্গ ও অস্ত্র গুদাম। “সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করাই আমাদের উদ্দেশ্য,” বলেছেন আইডিএফ মুখপাত্র। তবে এই হামলায় অসংখ্য বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারানোয় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।
মানবিক সংকট চরমে:
গাজায় খাদ্য, পানি, ওষুধের তীব্র সংকট চলছে। একাধিক হাসপাতাল আর কার্যক্ষম নয়। বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকায় যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত। জাতিসংঘ বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “গাজায় যা হচ্ছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বেসামরিক মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার কথা, কিন্তু এখানে তা চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসি এবং বেশ কিছু মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেছে, বেসামরিক লোকদের রক্ষা করা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরায়েলকে সমর্থন করে যাচ্ছে, যদিও মানবিক সাহায্যের জন্য কিছু ত্রাণ করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়েছে।