অদৃশ্য শক্তি নয়, দেশ রক্ষার বাস্তব নায়ক সেনাবাহিনী!

সেনাবাহিনীর কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির লক্ষ্যে গঠিত ‘সেনা সদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৫’-এর প্রথম পর্ব রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সেনা সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ পর্ষদের উদ্বোধন করেন। এতে সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও অংশ নেন।

সেনাবাহিনীর অবদানের প্রশংসা

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যেমন নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছে, তেমনি অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়ক শক্তি হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

তিনি সেনাবাহিনীর সদস্যদের পেশাদারিত্ব, দায়িত্ববোধ ও আত্মত্যাগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং দেশের প্রয়োজনে তাদের নিরবচ্ছিন্ন সহায়তা জাতির কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন।

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও স্মরণ

বক্তব্যের শুরুতেই অধ্যাপক ইউনূস মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মরণ করে বলেন,

তাঁদের আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ রাখবে।

তিনি আরও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে আহত ও শহীদ সেনাসদস্যদের, পাশাপাশি ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ছাত্র-জনতাকেও।

পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় সততা ও নেতৃত্বের গুণাবলির ওপর গুরুত্ব

প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনী পর্ষদের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন,

“সৎ, নীতিবান, পেশাদার এবং নেতৃত্বের গুণসম্পন্ন অফিসাররাই উচ্চতর পদে পদোন্নতির যোগ্য। রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে সামরিক জীবনে যাঁরা দক্ষ নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বিবেচনায় আনতে হবে।”

তিনি আরও নির্দেশনা দেন, অফিসারদের পেশাগত দক্ষতা, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও নিযুক্তিগত উপযুক্ততার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে।

সেনাপ্রধানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,

সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও সুশৃঙ্খল নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।

সমাপ্তি পর্ব ও চিহ্নিত বার্তা

অনুষ্ঠান শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন এবং সেনা সদর পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। এতে তিনি সেনাবাহিনীর সার্বিক পেশাদারিত্ব ও দেশের প্রতি নিষ্ঠা তুলে ধরেন।