২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির তারিখ নির্ধারণ ১৭ জুলাই। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, এই মামলার বিচার দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২৫, ২:০২:১৩
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামি খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি ১৭ জুলাই নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর এই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ১৯ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ খালাসের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে। আদালত লিভ টু আপিল মঞ্জুর করলেও হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেনি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শেখ হাসিনাসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। অনেকেই এখনো স্প্লিন্টার বহন করছেন, কেউ কেউ পঙ্গু হয়ে গেছেন।
হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত রায় দেন। এতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি:
লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, মো. হানিফ, মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ এবং মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি (বেশিরভাগ পলাতক):
শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন, মো. খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু।
হামলার পর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। প্রায় ১৪ বছর পর বিচারিক রায় হলেও হাইকোর্টের রায়ে আসামিরা খালাস পান, যা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা শুরু হয়। আপিল বিভাগে শুনানির মাধ্যমে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির দিকেই এখন নজর সবার।