পেট খারাপ, ডায়রিয়া বা গ্যাস্ট্রিক প্রাকৃতিকভাবে আরাম পেতে খেতে পারেন এই ঘরোয়া খাবারগুলো।
প্রকাশিত : ২৯ জুন ২০২৫, ১:৫৯:০৬
হজমের গোলমাল? বারবার বাথরুম ছুটছেন? শরীর যেন ঝিম ধরে আছে? সাবধান! ডায়রিয়া শুধু পানি নয়, শরীর থেকে কেড়ে নেয় শক্তিও। আর তাই, এই সময় খাবার নির্বাচনে ভুল করলে বিপদ ডেকে আনতে পারেন নিজের অজান্তেই।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ডায়রিয়া বা পেট খারাপ বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় সর্বাধিক সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। আর প্রতিবারই তা শরীরের ভেতর থেকে বার্তা দেয় “আমাকে পুনরুদ্ধার করো!”তবে প্রশ্ন হলো কী খাবেন এই সময়? শুধু ওষুধ নয়, খাবারই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের গবেষণা বলছে, কিছু নির্দিষ্ট খাবার পেটের নাজুক পরিস্থিতিকে সামাল দিতে পারে একেবারে ঘরোয়া উপায়ে।
টক দই কিংবা কেফির: অন্ত্রের প্রকৃত বন্ধু
প্রোবায়োটিক উপাদানে ভরপুর এই দুধজাত খাবার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুনরুজ্জীবিত করে।
তবে সতর্কতা: খুব তীব্র ডায়রিয়ার শুরুতে নয়—উপসর্গ কমলে খেতে শুরু করুন।
ল্যাক্টোজ অসহিষ্ণু হলে এড়িয়ে চলুন।
সিদ্ধ গাজর: নরম, কিন্তু পেটের জন্য শক্ত অস্ত্র
গাজরে থাকা দ্রবণীয় আঁশ পাতলা মলকে ঘন করতে সাহায্য করে। আর বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়ে অন্ত্রের প্রতিরক্ষাব্যুহ গড়ে তোলে।
বিকল্প: ঝিঙে বা বরবটি।
আলু: সহজে হজম হয়, শক্তি দেয়, পটাসিয়ামের উৎস
সিদ্ধ বা ভাপে রান্না করা আলু শরীরের হারানো পটাসিয়াম ফিরিয়ে আনে। তবে ঝাল বা তেল-চর্বিযুক্ত রান্না এড়িয়ে চলুন।
চাল ও কলা: ক্লাসিক কম্বো, বিজ্ঞানসম্মতও
সাদা চাল কম আঁশযুক্ত, সহজে হজম হয়।
কলা দ্রবণীয় আঁশ ‘পেকটিন’ দিয়ে মল ঘন করে। একসাথে খেলে দ্রুত আরাম আসতে পারে।
ওটস: আঁশ আছে, কিন্তু সঠিক ধরনের
ওটসে থাকা দ্রবণীয় আঁশ অন্ত্রের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে রাখে। ২০১৭ সালের এক মেডিকেল জার্নালে ওটসের ডায়রিয়া প্রতিরোধে কার্যকারিতা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
অ্যাপলসস: আপেলের মোলায়েম রূপ
সিদ্ধ করে চটকে তৈরি এই ‘প্রাকৃতিক জ্যাম’ অন্ত্রের পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, গ্যাস কমায়, আর ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্য বজায় রাখে।
মুরগির ঝোল বা হাড়ের ঝোল: শরীরকে আর্দ্র ও সাবলীল রাখে
সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাসিয়ামসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ ঝোল সহজে হজম হয় এবং শরীর পুনরায় জলীয় ভারসাম্যে ফিরে আসে।
চর্বিহীন প্রোটিন: ডিম, টার্কি বা গ্রিলড মুরগি
ডায়রিয়ার সময় শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। সঠিক পরিমাণ প্রোটিন কোষ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। তবে চর্বিযুক্ত বা অতিমসলা খাবার না খেলেই ভালো।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
উপসংহার: খাবারই হতে পারে সবচেয়ে ভালো ওষুধ
পেট খারাপ কোনো লজ্জার বিষয় নয়, বরং এটি অন্তরের একটি ইমারজেন্সি সংকেত। এই সময় আপনার ডায়েট-ই হতে পারে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা। তাই ঝাল-মশলা এড়িয়ে, সহজপাচ্য, হালকা এবং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত খাবারগুলোই খান। এতে শুধু শরীর নয়, মনও শান্ত থাকবে।