রাজস্ব আদায় বন্ধের সুযোগ নেই, চলমান কলমবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের কড়া হুঁশিয়ারি
প্রকাশিত : ৩০ জুন ২০২৫, ৯:৫৪:৫৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর চলমান কর্মবিরতির প্রেক্ষিতে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে—এনবিআরের চাকরি ‘অত্যাবশ্যক সেবা’র (Essential Service) আওতাভুক্ত, ফলে এতে অনুপস্থিতি, কর্মবিরতি বা দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের কর্মকাণ্ড শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল এবং তার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
শুক্রবার রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
কী বলেছে সরকার?
সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে,
জাতীয় রাজস্ব ব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রের আর্থিক মেরুদণ্ড। কোনোভাবেই রাজস্ব প্রশাসনে অচলাবস্থা সৃষ্টি করা যাবে না। রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত উপস্থিতি ও দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ব্যত্যয় ঘটলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া যেসব কর্মকর্তা কলমবিরতি বা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, তাদের তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পটভূমি: কলমবিরতির সূত্রপাত
গত এক সপ্তাহ ধরে এনবিআরের একটি বড় অংশ কাঠামোগত সংস্কার, চেয়ারম্যানের অপসারণ, ও দুইটি নতুন বিভাগের (রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব পরিচালন) কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে কলমবিরতিতে গেছেন। এতে বন্দরে পণ্য খালাস, আমদানি-রপ্তানির শুল্ক আদায়, এবং রাজস্ব সম্পর্কিত অনেক কার্যক্রমে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসসহ বেশ কয়েকটি বড় বন্দরে গত কয়েকদিনে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
সরকারের উদ্বেগ ও বার্তা
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন,
আমরা প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করি, কিন্তু রাজস্ব সংগ্রহে বিঘ্ন ঘটানো চলবে না। এটি দেশের সার্বিক অর্থনীতির ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
সরকার বারবার উল্লেখ করছে, এনবিআরের কর্মচারীরা সংবিধান অনুযায়ী ‘অত্যাবশ্যক রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব’ পালন করেন, সুতরাং এই দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করলে চাকরি বিধিমালায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কর্মকর্তাদের পাল্টা বক্তব্য
BCS (ট্যাক্স ও কাস্টমস) কর্মকর্তাদের সংগঠনের দাবি, তারা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আন্দোলনে নন বরং "প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও পেশাগত নিরাপত্তা" রক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তারা বলছেন, আলোচনার মাধ্যমে সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত না এলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হবে।