বাহারকে নিতে এসেছিলেন মা, স্ত্রী, মেয়ে, নানি ও আত্মীয়রা সবার প্রাণ গেল এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায়
প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ৪:১৫:৪২
ওমানপ্রবাসী বাহার উদ্দিন ফিরে এসেছিলেন দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে। প্রিয়জনদের সঙ্গে আবার একত্র হওয়ার আনন্দ ছিল তাঁর মনে। কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় বিভীষিকায়।
গতকাল বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলাইয়াপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাইক্রোবাস খালে পড়ে যায়। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় নিহত হন বাহারের মা খুরশিদা বেগম (৫৫), স্ত্রী কবিতা বেগম (৩০), মেয়ে মীম আক্তার (২), নানি ফয়জুন নেসা (৮০), ভাবি লাবনী বেগম (৩০), ভাতিজি রেশমি আক্তার (১০) ও লামিয়া আক্তার (৯)।
পরিবারের সবাই হারালেন বাহার
দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত সদস্য বাহার উদ্দিন বলেন, “আমি ফিরছিলাম সবাইকে বুকে জড়িয়ে ধরতে। অথচ ফিরে পেয়েছি সাতটা লাশ।”
তিনি জানান, গাড়িতে উঠেই তাঁর মা বলছিলেন, “তোর জন্য কত অপেক্ষা করছি, বাপ।” কিন্তু সে কথা শেষ হতেই না হতেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা।
বাহারের অভিযোগ,
চালক গাড়ি চালানোর সময় ঘুমে ছিলেন। কুমিল্লায়ও একবার দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলাম। বলেছিলাম ঘুমিয়ে নিতে। কিন্তু তিনি কথা শোনেননি।
দুর্ঘটনার সময় চালক জানালা দিয়ে বেরিয়ে গেলেও দরজা খুলে দেননি। এতে গাড়ির ভেতরে থাকা অন্যরা আটকা পড়ে যান এবং প্রাণ হারান।
একই পরিবারের সাত লাশ গতকাল সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চৌপল্লী গ্রামে পৌঁছায়। বাহারের ছোট উঠানে জানাজা ও দাফনের আয়োজন করা হয়। পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি খুঁড়ে রাখা হয় ছয়টি কবর। একসঙ্গে জানাজা শেষে দাফন করা হয় নিহতদের।
বাহারের বাবা আবদুর রহিম বিছানায় শুয়ে নিঃশব্দে কাঁদছিলেন। স্ত্রী, শাশুড়ি, দুই পুত্রবধূ ও তিন নাতনিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তিনি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “একটি পরিবার শেষ হয়ে গেল। এই শোক ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। পুরো চৌপল্লী গ্রাম আজ স্তব্ধ।”