 
                            প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১:১৬:৫৯
ইসরায়েলের বন্দিশিবির থেকে মুক্ত হয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা হবে, এমন স্বপ্নে বিভোর ছিলেন হাইথাম সালেম। কিন্তু সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই হলো গুঁড়েবালি, যখন ফিরে দেখলেন—শূন্য ঘরে নেই সন্তানদের কোলাহল, তাকে ঘিরে হয়নি কোনো আয়োজন।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে মুক্তি পাওয়া এই ফিলিস্তিনি বন্দি ঘরে ফিরেই প্রথম জানলেন স্ত্রী ও তিন সন্তানের কেউ বেঁচে নেই। সবাই নিহত হয়েছে চলমান সংঘাতে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম আইটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বছর এক তল্লাশিচৌকি থেকে হাইথাম সালেমকে আটক করেছিল ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সোমবার মুক্তির পর নিজ বাড়িতে ফেরেন স্ত্রী ইখলাস এবং সন্তান ইমান, লায়ান ও বারা’র সঙ্গে পুনর্মিলনের আশায়।
তিনি জানতেন, তার বাবা মারা গেছেন। কিন্তু জানতেন না, তিনি যখন কারাগারে বন্দি, তখন প্রাণ গেছে স্ত্রী ও সন্তানদের।
হাইথাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার সন্তানদের হারিয়েছি। আমি তাদের দেখতে চাই। তাদের ছবি দেখান আমাকে। আমি প্রতিদিন তাদের স্বপ্ন দেখতাম। সবাই মারা গেছে। বিশ্বাসই করতে পারছি না। আমি কারাগারে থাকতেই মেয়ের জন্মদিন উদযাপন করেছিলাম। আমার বিবাহবার্ষিকীতেই আমাকে আইডিএফ আটক করেছিল। এখন শুধু আমি বেঁচে আছি। কেন আমাকে মুক্তি দেওয়া হলো? কেন?’
কারাগারে থাকাকালীন হাইথাম তার মেয়ের জন্মদিনের উপহার হিসেবে হাতে বানানো একটি ব্রেসলেট তৈরি করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি এটা বানিয়েছিলাম মেয়ের জন্য। পাঁচদিন পর ওর জন্মদিন।’
হাইথাম জানান, মুক্তির পর তার চাচাতো ভাইয়েরা তাকে স্ত্রী ও সন্তানদের মৃত্যুর খবর দিয়েছিলেন।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল প্রায় ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫০ জন ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর হামলার দায়ে আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং বাকি প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন গাজা থেকে আটক হয়ে কোনো অভিযোগ ছাড়াই বন্দি ছিলেন।