সাবেক কূটনীতিক সারজিস আলম রাজনৈতিক প্রতীক ব্যবহারের পেছনের 'গোপন সমঝোতা'র ইঙ্গিত দিয়ে বলেন শাপলা না হলে ধানের শীষও হয় না!
প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০২৫, ৪:৩৭:৫৮
জাতীয় ফুল শাপলাকে রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, “শাপলা যদি রাজনৈতিক প্রতীক না হতে পারে, তাহলে ধানের শীষও হতে পারে না।” নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নীতিগত এই সিদ্ধান্তকে পক্ষপাতদুষ্ট ও আইনের ব্যত্যয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। বুধবার (১০ জুলাই) মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে সারজিস আলম এসব মন্তব্য করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, শাপলা জাতীয় প্রতীক নয়, বরং জাতীয় প্রতীকের একটি অংশ। একইভাবে ধানের শীষ, পাটপাতা ও তারকাও জাতীয় প্রতীকের অংশ। ফলে একটিকে নিষিদ্ধ করে অন্যটি বৈধ রাখা হলে তা আইনগতভাবে অসঙ্গত।
সারজিস আলম লিখেছেন,
“জাতীয় ফুল হিসেবে শাপলার প্রতীক হতে আইনগত বাধা নেই। কারণ, জাতীয় ফল কাঁঠাল ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক প্রতীকের তালিকায় আছে। তাহলে শাপলা নিয়ে এই সংকোচ কেন? যদি মার্কা দেখেই ভয় পান, তাহলে সেটা আগে থেকেই বলেন।”
তিনি আরও বলেন, “এনসিপি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করেছে এবং সেখানে প্রতীক হিসেবে শাপলাসহ তিনটি বিকল্প প্রতীকের নাম জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইসি নীতিগত সিদ্ধান্তে বলেছে, শাপলাকে তফসিলভুক্ত করা হবে না।”প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন ‘জাতীয় প্রতীক বা জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন’ প্রতীকগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত রাজনৈতিক প্রতীক অনুমোদনে সংযত নীতিমালা অনুসরণ করে থাকে। এই ধারায় শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।তবে এনসিপি নেতাদের মতে, ইসির এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এবং তা নতুন নিবন্ধনের আবেদনকারী দলগুলোর প্রতি অবিচার। এই বিষয়ে তারা কমিশনের বিরুদ্ধে আপিলের চিন্তা করছেন বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।শাপলাকে রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে গ্রহণ না করার পেছনে কোনো গোপন উদ্দেশ্য আছে কি না এই প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন সারজিস। তার ভাষায়, “আইনের দোহাই দিয়ে রাজনৈতিক প্রতীক নির্ধারণে পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হলে গণতন্ত্রের ভিত্তিই দুর্বল হয়ে পড়ে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জাতীয় প্রতীকের ব্যবহার নিয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলেও একই ধরনের প্রতীক ইতিপূর্বে বিভিন্ন দলের অনুমোদিত হওয়ায়, নির্বাচন কমিশনের বর্তমান অবস্থান প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচন কমিশন সারজিস আলমের যুক্তি ও জনমতের প্রতিফলনে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করে কি না। তবে এতেই বোঝা যাচ্ছে, প্রতীক নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই শুধু মাঠে নয়, শুরু হয়ে গেছে সামাজিক মাধ্যমে এবং আইনি পরিসরেও।