বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছর পূর্ণ করল আজ। দীর্ঘ সংগ্রাম, নির্বাসন ও নেতৃত্ব সংকট পেরিয়ে দলটি এখন নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মনোযোগী।
প্রকাশিত : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:৪১:৫৬
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর। রাজধানীর রমনা বটমূলে পড়ন্ত বিকেলের নিরিবিলি সময়ে ছোট্ট টেবিল, কিছু চেয়ার আর হাতে গোনা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন নতুন এক রাজনৈতিক শক্তির জন্মের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শকে সামনে রেখে আত্মপরিচয়ের এক ‘যূথবদ্ধ শক্তিমঞ্চ’ হিসেবেই যাত্রা শুরু করে দলটি। চার দশকের বেশি পথ অতিক্রম করে বিএনপি আজ প্রতিষ্ঠিত দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে। আন্দোলন, সংঘাত, জনপ্রিয়তা আর উত্থান-পতনের দীর্ঘ ইতিহাস পেরিয়ে দলটি এখন নতুন এক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপি ফিরে পেয়েছে এক অভাবনীয় রাজনৈতিক সুবিধাজনক পরিবেশ।
দীর্ঘ নির্বাসনে থেকেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়াল নেতৃত্বের মাধ্যমে তৃণমূলকে সংগঠিত করেছেন, জনপ্রিয়তাকে তুলেছেন নতুন উচ্চতায়। অন্যদিকে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ কারাবাস ও অসুস্থতার পর এখন চিকিৎসাধীন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের হওয়া লাখো মামলা আদালতে খারিজ হচ্ছে, ফেরারি নেতাকর্মীরা ফিরে আসছেন ঘরে। এই পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে দলের প্রধান মনোযোগ নির্বাচনের দিকে।
বর্তমানে বিএনপির লক্ষ্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়ভিত্তিক সুশাসন গড়ে তোলা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিষ্ঠার পর যে কোনো সময়ের তুলনায় বিএনপি এখন সবচেয়ে অনুকূল অবস্থানে রয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক ড. মাহবুবউল্লাহর মতে, গণতন্ত্রকে লাইনচ্যুত করার জন্য কিছু শক্তি এখনও সক্রিয়। তাই বিএনপিকে সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে এবং জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি
৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছয় দিনের কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা। আজ ১ সেপ্টেম্বর ভোরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় শেরেবাংলা নগরে প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা এবং বিভিন্ন মহানগর-জেলায় র্যালি ও সভার আয়োজন করা হবে।
২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য র্যালি। ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা ও পৌরসভায় আলোচনা সভা ও র্যালি, ৪ সেপ্টেম্বর সারাদেশে বৃক্ষরোপণ, মাছ অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে। ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে গোল টেবিল বৈঠক। এছাড়া বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ ক্রোড়পত্র, প্রকাশিত হয়েছে পোস্টারও।