উত্তরার দগ্ধ শিশুদের যন্ত্রণায় ফিরে এসেছে ব্যক্তিগত এক দুঃসহ অতীত; যেখানে মানবতার চেয়ে বড় হয়ে উঠেছিল পক্ষপাত ও অবহেলা
প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২৫, ১২:২৫:৩৯
আমার জীবনের যত দুঃসহ স্মৃতি আছে তার একটি বার্ন ইউনিটকে ঘিরে। উত্তরা ট্রাজেডির শিকার দগ্ধ শিশুতে বার্ণ হাসপাতাল ও ইউনিটগুলো ভরে যাবার পর আমার স্মৃতিপটে ভেসে উঠছে সেই দুঃসহ স্মৃতি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে আমি আমার অগ্নিদগ্ধ স্ত্রীকে চিকিৎসা করাতে বার্ন ইউনিটে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যান।
আমরা ডাক্তার ইব্রাহিম, নূরুল ইসলাম, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার মালেক ও কাজী কামরুজ্জামানদের দেখেছি। বার্ন ইউনিটে যাবার আগ পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল ডাক্তার মানেই মানবতার অগ্রদূত। রোগীর চিকিৎসা ও সেবাই তাদের কাছে সবকিছু। মানুষের প্রাণরক্ষাই তাদের ব্রত। কিন্তু আমার সে ধারণা বদলে যায়। আমি বুঝতে পারি সব ডাক্তার সমান না। অনেকের কাছে মানবতার চেয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাত বেশি অগ্রাধিকার পায়।
আমার স্ত্রী কেবল এটুকু পরিচয়ের কারণেই ইউনিটের বড় ডাক্তারেরা, যাদের অনেক সুনাম তারা কেউ ধারে কাছেও আসেননি। জুনিয়র ডাক্তার ছাড়া কেউ চিকিৎসা করেননি। আমাদের প্রতি ইউনিটের সার্বিক আচরণও ছিল অনেক রূঢ় ও রুক্ষ। তাচ্ছিল্য ও অবহেলা কাকে বলে তা আমরা ক'দিনেই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। তারা কে কতোটা বড় মাপের মানুষ, প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় তা' পরিমাপ করতে পেরেছি।
নাম বলছি না, খুব বড় এক ডাক্তার তীব্র কটাক্ষ ও কটুক্তিও করেছিলেন। তারা আমার বিরুদ্ধে বিষোদগার প্রচারেই বেশি আগ্রহী ও তৎপর ছিলেন। আমার স্ত্রী মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। সবাই সেই অসুস্থতাকে পুঁজি করার চেষ্টা করেছেন স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। অন্যদের কথা বলবো না, চিকিৎসার মতো মহৎ পেশায় নিয়োজিত প্রবীণ ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পক্ষপাত, বিদ্বেষ ও অন্ধতায় আমি স্তম্ভিত হয়েছিলাম। তবে কারো বিরুদ্ধেই আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি তাদের কল্যাণ কামনা করি। প্রার্থনা করি, তাদের চিত্ত শুদ্ধ হোক, অন্ধ হয়ে থাকা মানবতার চোখ খুলে যাক।
মারুফ কামাল খানের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে সংগৃহীত