প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা, মেডিকেল ব্যবস্থা হিমশিম জরুরি সহায়তা চায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ
 
                            প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২৫, ৩:৫২:১৩
বরগুনা জেলায় গত কয়েক বছরে ডেঙ্গুর প্রভাব ছিল সীমিত। তবে চলতি মৌসুমে হঠাৎ করে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা অবকাঠামো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী,
হাসপাতালে হাহাকার: এক বিছানায় দুই রোগী
বরগুনা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, একটি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি, যেখানে মাত্র ২০টি শয্যা রয়েছে। একাধিক ওয়ার্ডে এক বিছানায় দুজন করে রোগীকে রাখা হচ্ছে।
একজন রোগীর স্বজন বলেন,
রাত ২টায় ভর্তি করালেও সকাল পর্যন্ত জায়গা পাইনি। পরে বারান্দায় বিছানা পেতে রাখছি।
জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মহিউদ্দিন বলেন, “চিকিৎসক, নার্স ও শয্যা সব কিছুর সংকট চলছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সহায়তা চেয়েছি।”
উপজেলা পর্যায়ে আরও ভয়াবহ অবস্থা
আমতলী, তালতলী, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের ভর্তিই নেওয়া যাচ্ছে না, ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বরিশাল মেডিকেল বা খুলনা হাসপাতালে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক চিকিৎসক বলেন,
রোগীর তুলনায় জনবল একেবারেই অপ্রতুল। অনেক রোগী সিরিয়াস অবস্থায় আসছেন।
ডেঙ্গু পরীক্ষায় জটিলতা
ডেঙ্গু শনাক্তে প্রয়োজনীয় কিট ও পরীক্ষার সামগ্রীও সংকটে রয়েছে। বরগুনা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু NS1 টেস্ট প্রতিদিন সীমিত সংখ্যক করা যাচ্ছে।
একজন নার্স জানান, “বেশিরভাগ রোগীকে রক্ত পরীক্ষা বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে বলা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের উদ্বেগ ও জনসচেতনতা
বরগুনা শহরে ইতোমধ্যে ফগিং ও মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করেছে পৌরসভা। তবে স্থানীয়রা বলছেন, এটা অপর্যাপ্ত।
এক বাসিন্দা বলেন, “বাজারের আশপাশে, ড্রেনেজে পানি জমে আছে। এখন ওষুধ ছিটিয়ে লাভ কী?” স্বাস্থ্য বিভাগ স্কুল, কলেজ, মসজিদে ডেঙ্গু সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও সভা চালু করেছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন
ঢাকা থেকে আগত বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য ডা. সাজ্জাদ হোসেন বলেন,
বরগুনায় সংক্রমণের হার যেভাবে বাড়ছে, এটি মহামারির আকার নিতে পারে। সময় থাকতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।