বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোতে সোনার চাহিদা আকাশছোঁয়া, ২০২৫ সালে ৪৩% বৃদ্ধি পরিকল্পনা। অর্থনৈতিক অস্থিরতায় সোনাকে নিরাপদ লগ্নি হিসেবে বেছে নিচ্ছে দেশগুলো।
প্রকাশিত : ১৯ জুলাই ২০২৫, ১২:২২:১৭
আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার মূল্য নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের পর থেকে এ প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ৪৩ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী সময় সোনার মজুত বাড়াতে আগ্রহী।
একই প্রতিবেদনে জানা গেছে, ৯৫ শতাংশ ব্যাংক তাদের কোষাগারে পর্যাপ্ত সোনা রয়েছে বলে মনে করছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার পর বিভিন্ন দেশ ডলারের বিকল্প হিসেবে সোনা সংগ্রহ বাড়াচ্ছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইনভেস্টর ডট কম জানিয়েছে, গত বছরের শেষে বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা সোনার পরিমাণ সরকারি রিজার্ভের প্রায় ২০ শতাংশ ছিল। ২০২৩ সালের শেষে এ হার কমে প্রায় ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) অনুমান করছে, এই বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো প্রায় ৯০০ টন অতিরিক্ত সোনা কিনবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলারের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর আস্থা কমার কারণেই তারা সোনার মজুত বাড়াচ্ছেন। বিশেষ করে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা ডলারের বিকল্প হিসেবে সোনা সংগ্রহে ব্যাপক আগ্রহী। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক টানা সপ্তম মাসে সোনা মজুত বৃদ্ধি করেছে, যা তাদের ডলারনির্ভরতা কমানোর তৎপরতার প্রমাণ।
ডব্লিউজিসির সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বর্তমানে ৪৭ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক খনি থেকে সরাসরি সোনা সংগ্রহ করে থাকে। এর মধ্যে বড় খনির সোনা কেনার হার ৩৭ শতাংশ এবং ছোট খনির ১৬ শতাংশ। বাকিটা বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে সোনার দাম সর্বকালীন উচ্চতায় উঠেছিল আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ ডলারে। বর্তমানে দাম কমে ৩ হাজার ২৫০ ডলারে হলেও বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয় অব্যাহত থাকায় দাম পুনরায় বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা বেড়েই চলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার প্রবণতা আগামী সময়েও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।