সচেতনতার অভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে, সিটি করপোরেশনের পরিছন্নতা কার্যক্রমে ঘাটতি নয় মূল দায় নগরবাসীরও
প্রকাশিত : ০২ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৪:৩০
ঢাকা: রাজধানীতে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পরিছন্নতা কার্যক্রম চলমান থাকলেও ড্রেনে পড়ে থাকা পলিথিন, প্লাস্টিক ও গৃহস্থালী বর্জ্যের কারণে পানির স্বাভাবিক নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে মিরপুর, ধানমন্ডি, মহাখালী, পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, সূত্রাপুরসহ বিভিন্ন এলাকা।
বুধবার (৩০ জুলাই) পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ড্রেন থেকে বস্তায় বস্তায় ময়লা তুলতে দেখা যায়। উদ্ধার করা বর্জ্যের মধ্যে ছিল পলিথিন, পুরোনো কাপড়, জুতো, এমনকি ভাঙা আসবাবপত্র। এমন দৃশ্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়তই দেখা যায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান,
প্রতিটি এলাকায় মাসে একাধিকবার ড্রেন পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু ড্রেন ভরাট হয় নাগরিকদের ফেলে দেওয়া বর্জ্যে। ড্রেনে পলিথিন জমে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হয়, ফলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বলছেন, প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা ময়লা পরিষ্কার করা হলেও নাগরিক অসচেতনতায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। কেউ কেউ বলছেন, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশেই ময়লা ফেলেন তারা। আবার কেউ খোলাখুলি স্বীকার করেন, ‘সবাই ফেলছে, আমি ফেললে দোষ কী?’
বিশেষজ্ঞদের মতে, নগরবাসীর দায়িত্বহীনতাই জলাবদ্ধতা নিরসনের পথে বড় বাধা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, ‘‘অধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা জরুরি হলেও, নাগরিকরা সচেতন না হলে কোনো কার্যক্রমই সফল হবে না।’’
সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘‘আমরা সপ্তাহে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাই। কিন্তু নগরবাসী যেখানে-সেখানে ময়লা ফেললে পরিষ্কার শহর গড়া সম্ভব নয়।’’
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চায় ঢাকাবাসী, অথচ দায়িত্ব পালনে পিছিয়ে তারা নিজেরাই। শুধু সরকার বা সিটি করপোরেশনের ওপর দোষ চাপিয়ে নয় সবার সম্মিলিত সচেতনতাই পারে এই জলাবদ্ধতার দুষ্টচক্র ভাঙতে।