আন্তর্জাতিক বাজারে চাপের মাঝে ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কমলেও রপ্তানি ও রাজস্ব আয়ে চমকপ্রদ অগ্রগতি।
প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১:২০:১৫
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানির চেয়ে রপ্তানির দিকেই ছিল বেশি গতি। একইসঙ্গে বেড়েছে সরকারের রাজস্ব আয়ও। পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় এবারের আমদানি কমলেও রপ্তানি ও রাজস্ব উভয়খাতে হয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
ভোমরা কাস্টমস স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫৯ হাজার ৬৯৩টি গাড়িতে ২০ লাখ ৮২ হাজার ৭২২ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। এসব পণ্যের মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এ থেকে সরকার আয় করেছে ৯৭৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা রাজস্ব। অন্যদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৬৩ হাজার ৯০২টি গাড়িতে ২৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬২ মেট্রিক টন পণ্য, যার বাজারমূল্য ছিল ৬ হাজার ৪৭৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সেসময় রাজস্ব আয় হয়েছিল ৯০৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আমদানির পরিমাণ ও মূল্য কমলেও রাজস্ব আয়ে ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ প্রবৃদ্ধি শুল্ক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, ট্যাক্স মূল্যায়নের স্বচ্ছতা ও কঠোর নজরদারির ফল বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে রপ্তানি খাতে আরও বেশি অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোমরা বন্দর দিয়ে ২২ হাজার ৯৩৭টি গাড়িতে ২ লাখ ৮৬ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পণ্যের মোট মূল্য ছিল ৩ হাজার ৪০৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ২৪ হাজার ৫৮০টি গাড়িতে ২ লাখ ৭৪ হাজার ১১০ মেট্রিক টন পণ্য, যার বাজারমূল্য ছিল ৩ হাজার ৯০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ফলে রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য উভয় ক্ষেত্রেই ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ প্রবৃদ্ধি রপ্তানিমুখী উদ্যোক্তাদের আগ্রহ, উন্নত অবকাঠামো এবং সীমান্তে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির ফল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
রাজস্ব আয়ের দিক থেকেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোমরা কাস্টমস স্টেশন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। বছরজুড়ে এই বন্দরের রাজস্ব আয় দাঁড়িয়েছে ৯৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৯২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আয় ছিল ৮৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
ভোমরা কাস্টমস স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ বলেন, “ভোমরা স্থলবন্দর অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি বন্দর। আমরা ধারাবাহিকভাবে রাজস্ব ও বাণিজ্য খাতে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতেও সবক্ষেত্রে এই প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী।”