 
                            প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৩:০৯:০০
‘তিস্তার চরে অসুস্থ মাকে কাঁধে নিয়ে দৌড়াচ্ছে দুই ছেলে। প্রাণান্তর চেষ্টা তাদের—যত দ্রুত সম্ভব নিতে হবে হাসপাতালে।’ এমন একটি ছবি হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সবার নজর কেড়েছে। অনেকে বলছেন—দোরগোড়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় এই ভোগান্তি, কেউবা প্রশংসা করছেন দুই ছেলের, কারও কারও চোখে এসেছে পানি। তবে এ ঘটনা সম্পর্কে স্বাধীনভাবে তথ্য যাচাই করতে পারেনি নাগরিক প্রতিদিন।
বিভিন্ন আঞ্চলিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গভীর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বৃদ্ধা। আশপাশে নেই চিকিৎসার ব্যবস্থা, হাসপাতালও বহু মাইল দূরে। মায়ের কষ্টের আর্তনাদে ছুটে আসেন দুই ছেলে। নিরুপায় হয়ে মাকে বাঁচানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন তারাই। ভোরের আলো ফুটতেই শুরু হয় জীবন-মরণ যাত্রা। নদীর চরে বালির ঢিবি আর কাঁদামাটির পথ পেরিয়ে হাঁটতে থাকেন কিলোমিটারের পর কিলোমিটার। মায়ের জন্য এমন নিরন্তর দৌড় যেমন দেশবাসীর মুখে হাসি ফুটিয়েছে, তেমনি কাঁদিয়েছেও।
তবে স্থানীয় সাংবাদিকদের কেউ কেউ বলছেন, এখন আর তেমন অবস্থা নেই যে, কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হেঁটে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তবে এমনটা হতে পারে, কিছুদূর কাঁধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এরপর হয়তো গাড়িতে করে নেওয়া হয়েছে। আর সেই মূহূর্তের ছবিটিই ছড়িয়ে পড়েছে। এখন চড়ের মধ্যেও ইজিবাইক বা এ ধরনের যানবাহন চলাচল করে।
এ বিষয়ে আবার গণমাধ্যমগুলো বলছে, তিস্তা নদীর গতিপথের পরিবর্তন এবং পর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় চরাঞ্চলের মানুষের কাছে জীবনযাত্রা অনেক কঠিন। বর্ষাকালে নদীর পানি ফুলে ফেঁপে উঠলে যাতায়াতের উপায় থাকে না। তখন ভরসা হয়ে ওঠে নৌকা। অন্যদিকে শুকনো মৌসুমে তিস্তার বুকে ধু-ধু বালুচর জেগে ওঠায় নৌকা চলে না, সড়ক না থাকায় যানবাহনও পৌঁছায় না। ফলে চরের মানুষেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেন। জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিতেও হিমশিম খেতে হয় তাদের।
তবে, ছড়িয়ে পড়া ছবিটি ঘিরে অনেক প্রশ্ন জেগেছে সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মনে—আসলেই কি এত দুর্দশা তিস্তাপারের বাসিন্দাদের, নাকি প্রকৃতির খেলায় এমন অনিশ্চয়তাই তাদের ভাগ্য হয়ে থেকে যাবে চিরকাল?