গত ৮ বছরে ৩০০ রোহিঙ্গা খুন, সক্রিয় ১০ সন্ত্রাসী গ্রুপ; ক্যাম্পগুলো এখন ‘মাদকের হটস্পট’
প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট ২০২৫, ৪:৪২:০০
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দিন দিন বাড়ছে অস্থিরতা। মাদক ও অস্ত্রের ব্যবসা, চোরাচালান, মানব পাচার, অপহরণ এবং চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে সশস্ত্র রোহিঙ্গা গ্রুপগুলো। স্থানীয় পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত আট বছরে এসব অপরাধে নিহত হয়েছেন প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কমিউনিটি নেতা, মাঝি ও সাধারণ বাসিন্দা।
শুধু চলতি বছরের আট মাসেই ক্যাম্পগুলোতে বিভিন্ন অপরাধে দায়ের হয়েছে ২৫০টি মামলা। এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ১৮টি, মাদক মামলা ১৫০টি এবং অপহরণের মামলা ৫০টি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, বর্তমানে ক্যাম্পগুলোতে অন্তত ১০টি সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এদের মধ্যে টেকনাফের আবদুল হাকিম বাহিনী সবচেয়ে তৎপর। মুক্তিপণ আদায়, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ইয়াবা ব্যবসায় সরাসরি জড়িত এই গ্রুপ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এখন মাদক পাচারের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রবেশ করা মাদকের মাত্র ১০ শতাংশ ধরা পড়ে। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রতিদিনই ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ নানা ধরনের মাদক প্রবেশ করছে।
পুলিশ বলছে, অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে। এপিবিএনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন,
সদস্য সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও আমরা দিন-রাত টহল ও অভিযান চালাচ্ছি। আগের তুলনায় হত্যাকাণ্ড কমেছে।
তবে রোহিঙ্গা নেতারা মনে করছেন, সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে প্রত্যাবাসন। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, “হত্যা কমলেও অপহরণ ও মাদক বাড়ছে। ক্যাম্পের মানুষ ভয়ভীতির মধ্যে আছেন। স্থায়ী সমাধান একটাই প্রত্যাবাসন।”