জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪৩ জন শিশু চিকিৎসাধীন, মায়েদের চোখে অশ্রু আর ঠোঁটে প্রার্থনা
প্রকাশিত : ২৩ জুলাই ২০২৫, ১:০০:৫৪
রাজধানীর উত্তরা এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হওয়া একটি যুদ্ধবিমানের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জন তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। দগ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে দেড় শতাধিক মানুষ, যাদের অধিকাংশই শিশু।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছে ৪৩ জন শিশু। সরেজমিনে বুধবার সকাল থেকে দেখা গেছে, হাসপাতালে স্বজনদের কান্না, প্রার্থনা আর বেদনায় ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। ফ্লোরে বসে, কাঁচের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে কিংবা ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কেউ সন্তানদের অবস্থা জানার জন্য অপেক্ষা করছেন।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা শিশুদের গজ ও ব্যান্ডেজে মোড়ানো দগ্ধ শরীরে চলছে যন্ত্রণার সঙ্গে যুদ্ধ। অভিভাবকরা হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন, কেউ কেউ সন্তানের পাশে বসে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছেন। বার্ন ইউনিটে আগুনে পোড়া শিশুদের অসহনীয় যন্ত্রণা দেখে অনেকেই কান্না থামাতে পারছেন না।
এক অভিভাবক জানান, তার ছেলে মাহতাব রহমান ভূঁইয়া (১৫) শরীরের ৭০% পুড়ে গেছে এবং আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। আরেকজন বলেন, “ভাগ্নি হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। ওকে আগুন থেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম, অথচ আজ সে আগুনেই পুড়ল।”
প্রশ্ন উঠেছে: স্কুলে পড়তে গিয়ে যদি সন্তানরা এমন মর্মান্তিক অবস্থায় পড়ে, তবে নিরাপত্তা কোথায়? অভিভাবকরা বলছেন, জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে শিক্ষালাভ বা ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন বৃথা।
হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দগ্ধদের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে আল্লাহর রহমত ছাড়া এদের বাঁচানো প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছেন স্বজনরা।