ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনার পরই নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম, "আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আজ আমেরিকা পার্টির জন্ম হলো" মাস্ক
প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০২৫, ১১:২৫:৩৮
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ উদ্যোক্তা ও টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের চমক দিয়েছেন। ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে মাস্ক বলেন, “আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আজ আমেরিকা পার্টির জন্ম হলো।”
তার এই ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
সাধারণের মতামত থেকেই অনুপ্রেরণা
দল গঠনের আগেই এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি জনমত জরিপ চালান মাস্ক। তিনি জানতে চান যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল প্রয়োজন কি না। জরিপে অংশ নেওয়া দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ নতুন রাজনৈতিক দল চাওয়ার পক্ষে মত দেন। মাস্ক বলেন, “তারা তা পাবে।”
‘বিগ বিউটিফুল বিল’-এর বিরোধিতা থেকেই বিরোধ চরমে
নতুন দল গঠনের পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ উল্লেখ করেন মাস্ক। এই করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিলকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য “দেউলিয়া হওয়ার রসদ” বলে অভিহিত করেন তিনি। শুক্রবার ট্রাম্প এই বিলকে আইনে পরিণত করেন। এর পরদিনই মাস্ক রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেন।
ঘনিষ্ঠতা থেকে বিরোধে রূপ
ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের সম্পর্ক এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় মাস্ক ট্রাম্পকে বিপুল অনুদান দেন এবং দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে তাঁর প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নিয়ে মতবিরোধের পর সেই সম্পর্ক অবনতি ঘটে। মাস্ক ঘোষণা দেন, এই বিলের পক্ষে থাকা আইনপ্রণেতাদের পরবর্তী নির্বাচনে হারাতে তিনি অর্থ ব্যয় করবেন।
রাজনৈতিক বিরোধের প্রভাব বাজারে
মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্বের জের টানছে শেয়ারবাজারও। টেসলার শেয়ারের দাম গত এপ্রিলের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর টেসলার শেয়ার উঠেছিল ৪৮৮ ডলারে, যা এখন নেমে দাঁড়িয়েছে ৩১৫.৩৫ ডলারে।
ভবিষ্যৎ রাজনীতির দিকনির্দেশনা?
রিপাবলিকান শিবিরে শঙ্কা দেখা দিয়েছে এই দ্বন্দ্ব ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচনে দলটির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অপরদিকে মাস্কের সমর্থকেরা মনে করছেন, এই নতুন দল মার্কিন রাজনীতিতে একটি “প্রযুক্তিভিত্তিক স্বাধীন প্ল্যাটফর্মের” সূচনা করতে পারে।
তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, ইলন মাস্ক যতই প্রভাবশালী ও সম্পদশালী হোন না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের দুই ঐতিহ্যবাহী দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট এর দুই শতাব্দীর আধিপত্য ভেঙে নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা চাট্টিখানি কথা নয়।