দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে এলেন আয়াতুল্লাহ খামেনি, মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যের আহ্বান
প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০২৫, ৫:১০:৩৫
ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। শনিবার (৫ জুলাই) তেহরানের 'ইমাম খোমেইনি' মসজিদে শিয়া মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র দিন আশুরার প্রাক্কালে আয়োজিত এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যায় তাকে এমন দৃশ্য সম্প্রচার করে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। খবরটি নিশ্চিত করেছে বিবিসিও।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল-ইরান সরাসরি সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে জনসমক্ষে আর দেখা যায়নি খামেনিকে। তখন তিনি শুধু তিনবার টেলিভিশনে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন। এতে দেশে গুঞ্জন ওঠে তিনি হয়তো নিরাপত্তার জন্য বাঙ্কারে অবস্থান করছেন।
ইসরায়েলের প্রথম হামলায় ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বিস্ময়কর ক্ষতি হয়। পাল্টা জবাবে ইরানও ইসরায়েলের ওপর বিমান হামলা চালায়। এই ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। পরে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধ আরও তীব্র হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১২৫টি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ফোর্দো, নাতানজ ও ইসফাহানে হামলা চালায়।
এই সংঘাতের মাঝেই ২৬ জুন খামেনির একটি রেকর্ডকৃত ভাষণে তিনি বলেন,
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান সত্ত্বেও ইরান ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
শনিবারের মসজিদে খামেনির উপস্থিতিকে ঘিরে রাষ্ট্রীয় টিভি এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার দেখা যায়। টিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি দেশাত্মবোধক গান ‘গাও, ও ইরান’ গাওয়ার অনুরোধ করছেন প্রবীণ ধর্মীয় সঙ্গীতশিল্পী মাহমুদ কারিমিকে। যুদ্ধকালীন সময়ে গানটি বিশেষ জনপ্রিয়তা পায় ইরানে। ইরানের বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংঘাতে এ পর্যন্ত ৯০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এমন এক সময়ে খামেনির এই প্রকাশ্য উপস্থিতি, যখন ইরানজুড়ে মহররম মাসের শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে। আশুরা, যা এই বছর পড়েছে ৬ জুলাই, সেখানে ইমাম হুসাইনের শাহাদাতকে স্মরণ করে শিয়া মুসলমানরা গভীর শ্রদ্ধায় দিনটি পালন করেন। সাধারণত দেশটির সর্বোচ্চ নেতাও এই শোক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, খামেনির এই জনসমক্ষে প্রত্যাবর্তন নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া ভিডিওর মাধ্যমে পাঠাতে।