‘যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে’ জানালেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি

তেহরান, ১৮ জুন:

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও এক ধাপ বাড়িয়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ঘোষণা দিয়েছেন, “যুদ্ধ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।” তেহরানে এক উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন। তার এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সঙ্কটকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

খামেনি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরে ছায়াযুদ্ধ চলেছে—অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, সাইবার হামলা, গোপন গুপ্তচরবৃত্তি। এখন সময় এসেছে সরাসরি জবাব দেওয়ার। যুদ্ধ এখন কেবল সম্ভাবনা নয়, বাস্তবতা।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খামেনির এই বক্তব্য মূলত পশ্চিমা বিশ্বের—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতি একটি সরাসরি হুঁশিয়ারি। সম্প্রতি সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননে ইরানপন্থী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ এবং গাজায় হামলার ঘটনায় ইরান নিজেকে সরাসরি হুমকির মুখে মনে করছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:

খামেনির বক্তব্যের পরপরই মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক ঘাঁটি ও জাহাজসমূহকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রেখেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক মুখপাত্র বলেন, “এ ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য সংঘাত আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।”

ইরানের প্রস্তুতি ও কৌশল:

তেহরান সূত্রে জানা গেছে, ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রেখেছে। এছাড়াও লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের মাধ্যমে আঞ্চলিক জোট গঠনেরও চেষ্টা করছে ইরান।

বিশ্লেষণ:

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আমির হোসেইন জানান, “খামেনির এই বক্তব্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইরানের জনগণের মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি শত্রু পক্ষকে হুঁশিয়ার করার কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে।”

তবে অনেকে মনে করছেন, এটি একটি প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান থেকে দেওয়া বক্তব্য, কারণ ইরান সরাসরি যুদ্ধ চাইছে না, বরং তারা আঞ্চলিক আধিপত্য রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।