 
                            প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৩:১৯:১৩
ভারত রুশ তেল আমদানি বন্ধ না করলে তাদের পণ্যে বড় ধরনের শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি বলেছেন রাশিয়ান তেলের ব্যাপারে তিনি আর এগোবেন না।’ গত সপ্তাহেও একই ধরনের কথা বলেছিলেন ট্রাম্প।
তবে ভারত গত সপ্তাহে ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, রাশিয়ান তেল আমদানির বিষয়ে মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে কোনো ফোনালাপ হয়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা যদি এমনটা বলতে চায়, তাহলে তাদের বিশাল শুল্কই দিতে হবে, যা তারা নিশ্চয়ই চায় না।’
ওয়াশিংটন সম্প্রতি রাশিয়ার বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর চাপ বাড়িয়েছে, বিশেষ করে জ্বালানি খাতে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এসব বাণিজ্যের মাধ্যমে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টায় অর্থ সরবরাহ হচ্ছে।
২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলে ভারতই সবচেয়ে বড় ক্রেতায় পরিণত হয়, কারণ রাশিয়া ছাড়মূল্যে তেল বিক্রি শুরু করে।
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বহু রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, যা সর্বোচ্চ শুল্কহারের একটি। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত জরিমানা শুল্কও যুক্ত হয়েছে, যা ওয়াশিংটনের মতে মস্কোর যুদ্ধ তহবিলের উৎস হিসেবে কাজ করছে।
ট্রাম্প বলেছেন, যদি ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ না করে, তবে এই শুল্কহার একই রকম থাকবে বা আরও বাড়ানো হবে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে বলে মোদি তাকে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এমন কোনো ফোনালাপের তথ্য তাদের জানা নেই।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘ভারতের প্রধান উদ্বেগ হলো দেশের ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করা।’
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অর্ধেকে নামিয়েছে। তবে ভারতীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, এমন কোনো বিষয় দেখা যায়নি।’
সূত্রগুলো জানায়, ভারতীয় পরিশোধনাগারগুলো ইতোমধ্যেই নভেম্বর মাসের জন্য তেল অর্ডার দিয়েছে, যার কিছু ডিসেম্বরেও পৌঁছাবে। ফলে তেল আমদানি কমার প্রভাব দেখা যেতে পারে ডিসেম্বর বা জানুয়ারির পরিসংখ্যানে।
কমোডিটি ডেটা প্রতিষ্ঠান কেপলার-এর হিসাবে, অক্টোবরে ভারতের রুশ তেল আমদানি ২০ শতাংশ বেড়ে দৈনিক ১৯ লাখ ব্যারেলে পৌঁছাবে। কারণ, ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রাশিয়ার কয়েকটি রিফাইনারি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মস্কো রপ্তানি বাড়াচ্ছে।