রুশ আগ্রাসন থামাতে আবারও শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কূটনৈতিক পথে সমাধানের আহ্বান।
প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০২৫, ১:১৯:২৪
রাশিয়ার সঙ্গে থমকে থাকা শান্তি আলোচনা আবারও শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেন। চলতি সপ্তাহেই নতুন আলোচনার উদ্যোগ চায় কিয়েভ। গতকাল শনিবার এক ভাষণে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। জেলেনস্কি বলেন, “যুদ্ধবিরতির জন্য যা করা দরকার, সবই করা উচিত। রাশিয়ার উচিত তাদের সিদ্ধান্ত থেকে বারবার পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ করা।” তিনি আরও বলেন, “সত্যিকারের এবং স্থায়ী শান্তি আনতে নেতৃত্ব পর্যায়ে সরাসরি সংলাপ প্রয়োজন।” তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসতেও প্রস্তুত বলে জানান।তবে ইউক্রেনের এ প্রস্তাবের বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নতুন আলোচনায় পুরনো মুখ
গত সপ্তাহেই ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ। এবার তাঁকেই শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে তুরস্কে অনুষ্ঠিত দুই দফা শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন উমেরভ। যদিও বন্দি ও মৃত সেনাদের মরদেহ বিনিময় ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি তখন হয়নি।
রাশিয়ার পুরোনো শর্ত
পূর্বের আলোচনায় রাশিয়া যেসব কঠোর শর্ত দিয়েছিল, তা ইউক্রেন প্রত্যাখ্যান করে। এসব শর্তের মধ্যে ছিল ইউক্রেনের চারটি দখলকৃত অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং পশ্চিমা সামরিক সহায়তা গ্রহণ না করা।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
শান্তি আলোচনার প্রস্তাব সামনে আসার সময়টিই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরুতে কিছুটা নমনীয় থাকলেও এখন তিনি রাশিয়াকে ৫০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ না হলে রুশ পণ্যের ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে ইউক্রেনের জন্য বাড়তি অস্ত্র সহায়তার অঙ্গীকারও করেছেন তিনি।
মস্কোর নরম সুর
গত শুক্রবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “শান্তি প্রক্রিয়ায় গতি আনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে মস্কো একমত।” বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অবস্থান এবং যুদ্ধক্ষেত্রে দীর্ঘায়িত জটিলতা এই দুই মিলেই মস্কোর অবস্থানে কিছুটা নমনীয়তা এসেছে।