গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার এক অভিনব সমাধান জাপানের স্বচ্ছ টয়লেট দেখলে চোখ ফেরানো দায়!
প্রকাশিত : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৫:৪১
কোথায় এই টয়লেট?
টোকিওর শিবুয়া পার্কের ভেতর স্থাপন করা হয়েছে এই অভিনব স্বচ্ছ টয়লেট। "Tokyo Toilet Project"-এর অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছে Nippon Foundation, যেখানে প্রযুক্তি আর স্থাপত্য মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১৭টি ইউনিক পাবলিক টয়লেট। সবচেয়ে আলোচিত এই ট্রান্সপারেন্ট টয়লেটটির ডিজাইনার হলেন প্রখ্যাত স্থপতি Shigeru Ban, যিনি আধুনিক স্থাপত্যে ন্যাচারাল এলিমেন্ট আর মানবিক প্রয়োজনের সেতুবন্ধন তৈরি করে আলোচিত।
“স্বচ্ছতার মধ্যেও গোপনীয়তা নিশ্চিত করাটাই আধুনিক ডিজাইনের আসল সৌন্দর্য।” —Shigeru Ban, স্থপতি
কীভাবে কাজ করে এই টয়লেট?
এই টয়লেট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে Smart Glass Technology। যখন ভেতরে কেউ থাকে না, তখন গ্লাস থাকে একেবারে স্বচ্ছ। কিন্তু কেউ ভেতরে প্রবেশ করলেই, দরজা লক করার সঙ্গে সঙ্গে গ্লাস হয়ে যায় ‘ফ্রস্টেড’ মানে অস্বচ্ছ। ফলে বাইরে থেকে আর কিছুই দেখা যায় না। এটা শুধু প্রযুক্তির খেলা নয়, বরং মানুষের নিরাপত্তাবোধ ও দৃশ্যমান পরিচ্ছন্নতার এক যুগান্তকারী সমাধান। অনেকেই পাবলিক টয়লেটে ঢোকার আগে জানতে চান, সেটি কতটা পরিষ্কার বা নিরাপদ। স্বচ্ছ দেয়াল সেই সন্দেহ দূর করে দেয়।
বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু
যুক্তরাষ্ট্রের CNN থেকে শুরু করে ব্রিটেনের BBC পর্যন্ত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এসেছে এই টয়লেটের গল্প। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বহু পর্যটক শুধু এই টয়লেট দেখার জন্যই ভিড় করছেন শিবুয়া পার্কে। ডিজাইন বিয়েনাল ২০২3-এও স্থান পেয়েছিল এই প্রকল্প। অনেকে বলছেন, এই টয়লেট আধুনিক নাগরিক জীবনের নান্দনিকতা ও গোপনীয়তার সার্থক মেলবন্ধন। “একটি পাবলিক টয়লেট এতটা আলোচিত হতে পারে জাপান তা প্রমাণ করেছে।” লোরা ফিশার, আরবান ডিজাইন এক্সপার্ট, নিউইয়র্ক
টেকসই ভাবনায় নতুন দিগন্ত
এই টয়লেটগুলো শুধু প্রযুক্তিনির্ভর নয়, বরং টেকসই উপাদানে তৈরি এবং রিসাইকেলযোগ্য। গ্লাস প্যানেলগুলো UV ও তাপ প্রতিরোধী, যার ফলে রোদ বা বৃষ্টিতেও টয়লেটের কার্যকারিতা কমে না। এছাড়াও এগুলো প্রতিবন্ধী ও শিশুদের জন্যও উপযোগী করে বানানো হয়েছে দরজা প্রশস্ত, গ্র্যাব-বার, সেন্সর-ভিত্তিক সিস্টেমসহ আধুনিক সব সুবিধা।
শেষ কথা
জাপানের এই উদ্ভাবন শুধু টয়লেট নয়, বরং প্রযুক্তির মাধ্যমে সামাজিক মানসিকতা ও স্থাপত্যে পরিবর্তনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ভবিষ্যতের শহর কেমন হতে পারে, তা যেন এখানেই আঁচ করা যায় যেখানে স্বচ্ছতার মধ্যে লুকিয়ে থাকে নিরাপত্তা, আর নিত্যদিনের প্রয়োজনেও থাকে শিল্পের ছোঁয়া।