আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সতর্কতা বিশ্ব অর্থনীতিকে আবার নতুন
প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২৫, ১২:৫৭:৩৫
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সতর্কতা বিশ্ব অর্থনীতিকে আবার নতুন অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড় করিয়েছে।
বিনিয়োগ, বাণিজ্য, মূল্যস্ফীতি সব খাতেই চলছে চাপ ও চ্যালেঞ্জের সমাহার।
বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার এক বিপজ্জনক ঢেউয়ের সামনে।
আইএমএফ-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াতে পারে ২.৫ শতাংশে, যা ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দার পর সর্বনিম্ন। এই ভবিষ্যদ্বাণী শুধু আর্থিক বিশ্লেষকদের নয়, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মনেও ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর ভাষ্যমতে, মন্দার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘায়ন, চীনের উৎপাদন হ্রাস, ইউরোপে মন্দার প্রবণতা এবং যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির লাগামছাড়া ধারা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্বব্যাপী ঋণ খাতে চরম চাপ। বিশ্লেষকরা বলছেন, “এবারের মন্দা শুধু সংখ্যার খেলা নয় এটি মানুষের জীবনধারা, কর্মসংস্থান এবং ভবিষ্যতের নিরাপত্তা প্রশ্নে বড় ধাক্কা হতে পারে।”
“এটা নিছক মন্দা নয়, এটা এক অর্থনৈতিক ভূমিকম্পের পূর্বভাস”
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও এই ভবিষ্যদ্বাণীর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে রপ্তানি খাতে ধীরগতি, রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা এবং ডলার সংকটে বৈদেশিক বাণিজ্যে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, “বিশ্বমন্দার ছায়া আগে থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। এখন প্রয়োজন দ্রুত নীতিগত পদক্ষেপ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা।” বিশ্ব অর্থনীতি বিশ্লেষণকারী সংস্থা “The Economist Intelligence Unit” বলছে, দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবারের সম্ভাব্য মন্দায়। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশ, বিশেষ করে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া প্রযুক্তি ও রপ্তানিনির্ভর বাজারে এখনও কিছুটা স্থিতিশীলতা ধরে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগান তাদের ক্লায়েন্ট নোটে জানিয়েছে, “২০২৫ সাল বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। এ বছর নিরাপদ খাতে (Safe Haven) বিনিয়োগ যেমন স্বর্ণ বা সরকারী বন্ডে ঝুঁকে যাবে বাজার।”
বিশ্ব মন্দা শুধু একটি রিপোর্ট নয়, এটি বাস্তবতার প্রতিফলন। প্রতিটি দেশ, প্রতিটি পরিবার ও প্রতিটি ব্যবসা এর আঁচে আক্রান্ত হতে পারে। এখন সময় পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত ও সুনির্দিষ্ট কৌশল গ্রহণের।