উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং-উন ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে রাশিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে ঠুকলেন সরাসরি।
প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৭:৪৯
রাশিয়ার যেকোনো পদক্ষেপেই উত্তর কোরিয়ার নিঃশর্ত সমর্থন থাকবে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে এমনই শক্ত বার্তা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন। তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে উত্তর কোরিয়ায় অবস্থানরত রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ-এর সঙ্গে বৈঠকে কিম এই প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ। উত্তর কোরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর ওনসান-এ অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কৌশলগত আলোচনা হয়। একইসঙ্গে লাভরভের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চোয়ে সন হুই। সেখানে তারা গত বছর স্বাক্ষরিত অংশীদারত্ব চুক্তির অধীনে সামরিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
কিম জং–উন বলেছেন,
“রুশ নেতৃত্ব ইউক্রেন সংকটে যে পদক্ষেপই নিক, আমরা তা নিঃশর্তভাবে সমর্থন করি ও করব। প্রয়োজন হলে আরও সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য উত্তর কোরিয়া প্রস্তুত।”
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, লাভরভ ও কিম জং–উন করমর্দনের পর একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন—যা দুই দেশের বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতাই নির্দেশ করে।
যুদ্ধকবলিত অঞ্চলে ১০ হাজার সেনা, অস্ত্র সহায়তা
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার একটি ঘনিষ্ঠ সামরিক মিত্রে পরিণত হয়েছে। কেসিএনএ-র প্রতিবেদনে বলা হয়, পিয়ংইয়ং রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের মাধ্যমে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করে। এরপর থেকে মস্কোর পাশে থাকার ঘোষণা দেন কিম জং–উন। এর ধারাবাহিকতায় গত বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঐতিহাসিক উত্তর কোরিয়া সফরের সময় দুদেশ একটি সামরিক চুক্তি সই করে, যাতে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ধারাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া উভয় দেশের ওপরই পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, সামরিক ও কৌশলগত ক্ষেত্রে তাদের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা গত দুই বছরে বহুগুণে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে পূর্ব এশিয়ায় নতুন শক্তিসাম্য গড়ে তুলতে পারে এবং পশ্চিমা জোটের জন্য নতুন উদ্বেগ তৈরি করবে।