জুন ২৮, ১৯৪০-স্থায়ী দারিদ্র্য বিমুক্তির পথপ্রদর্শক ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা আজ ৮৬ বছরে পদার্পণ করলেন।
প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২৫, ১২:৫৪:৪৭
বিশ্ববিখ্যাত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সমাজ পরিবর্তনের অগ্রপথিক এবং ক্ষুদ্রঋণ ধারণার জনক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আজ জন্মদিন। ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা দুলা মিঞা সওদাগর এবং মাতা সুফিয়া খাতুন। সহধর্মিণী অধ্যাপক দিনা আফরোজ এবং তাঁদের দুই কন্যাসন্তান রয়েছে।
শিক্ষা ও কর্মজীবনের শুরু থেকেই ড. ইউনূস মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। চট্টগ্রাম কলিজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় সারা পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে ১৬তম স্থান অর্জন করেন। এরপর চট্টগ্রাম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি অধ্যয়নের পর ১৯৬১ সালে শিক্ষকতা শুরু করেন চট্টগ্রাম কলেজে। ১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফুলব্রাইট স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষায় যান। সেখানেই ১৯৭১ সালে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন এবং মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশে ফিরে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় দারিদ্র্য বিমোচনে ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ ধারণার সূচনা করেন। ১৯৭৬ সালে জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করে ১৯৮৩ সালে সেটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ হিসেবে রূপ দেন।
এই অভিনব উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যবিরোধী মডেল হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও আমেরিকা, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকাসহ ৪০টিরও বেশি দেশে গ্রামীণ ব্যাংক মডেল অনুকরণ করা হয়েছে।
২০০৬ সালে ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, যা কোনো বাংলাদেশির প্রথম নোবেল বিজয়। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
সম্প্রতি রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত আগস্টে তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে দেখা যায়। বর্তমান দায়িত্বে থেকেও তিনি দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের পথে প্রত্যাবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
ড. ইউনূস কেবল একজন অর্থনীতিবিদ নন তিনি একজন দার্শনিক, উদ্যোক্তা, সমাজ সংস্কারক, যিনি বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন আন্তর্জাতিক মর্যাদার উচ্চ আসনে।
সংক্ষেপে মূল পয়েন্টসমূহ: