নির্বাচন, সুশাসন ও সংবিধান সংস্কার নিয়ে গঠিত ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে বিরোধী ও সরকারি সব রাজনৈতিক দল ঐক্যমতে পৌঁছেছে ৬২টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব নিয়ে।
 
                            প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০২৫, ৪:৪৬:৫৯
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে প্রথম ধাপের রাজনৈতিক সংলাপের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ নামে ৬২ দফার একটি সংস্কার প্রস্তাবের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন, প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কাঠামোতে সময়োপযোগী ও গণমুখী পরিবর্তনের রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়েছে।বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠানো হয়েছে এ খসড়া। কমিশন সূত্র জানায়, গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত মোট ৩৫টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে সংলাপ হয়। এতে উঠে আসে ১৬৬টি প্রস্তাব। তার মধ্য থেকে ৬২টি প্রস্তাবে অধিকাংশ দলের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এই ৬২টি প্রস্তাব নিয়েই তৈরি হয়েছে প্রথম ধাপের ‘জুলাই সনদ’। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রস্তাবগুলোতে প্রতিটি ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩৩টি দলের একমত হওয়ার দলিল রয়েছে। এতে স্বচ্ছ নির্বাচন, শক্তিশালী বিচারব্যবস্থা, স্বাধীন প্রশাসন, সুশাসন ও দুর্নীতি দমনের বাস্তবিক কাঠামো নিয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপের প্রস্তুতি চলছে
ঐকমত্য কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এটি হচ্ছে প্রথম ধাপের ঐকমত্যের প্রস্তাব। দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে যেসব বিষয়ে একমত হওয়া গেছে, সেগুলোও শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে এগুলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখায় রূপ দিতে চায় কমিশন।”
এ খসড়া প্রকাশের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়। অনেক রাজনৈতিক দল একে ‘ঐতিহাসিক উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করলেও, কয়েকটি বড় দল এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটি একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিস্তারিত রূপরেখা কী আছে?
কমিশনের খসড়া প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন
ইসির পূর্ণ স্বাধীনতা ও আইনি সংস্কার
দলীয় সরকারের ক্ষমতা নিরুৎসাহিত করা
বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ
দুর্নীতি দমন কমিশনের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন
মন্ত্রিপরিষদে জনসংখ্যা অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ
রাজনৈতিক দলের অর্থায়ন, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত কঠোর করা
সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকা শক্তিশালী করা
‘জুলাই সনদ’ নিয়ে করণীয় কী?
ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, এই সনদের আলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরির জন্য আগামীতে আরও কয়েক দফা সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি, প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
বিস্তারিত প্রতিবেদন ও প্রতিক্রিয়া আসছে...