২০১৮ সালের নির্বাচন, আন্দোলন দমন, সরকারের পতন সব নিয়ে বিস্ফোরক জবানবন্দিতে ক্ষমা চাইলেন সাবেক পুলিশপ্রধান
প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:৪১:৩৬
২০১৮ সালের নির্বাচনে অনিয়ম, গুম ও হত্যা এবং চলতি বছরের ‘জুলাই আন্দোলন’ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী মামুন। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ২৪ মার্চ দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, “৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে বুঝতে পারি শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা ছাড়বে।”
চৌধুরী মামুনের এই জবানবন্দি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলার অংশ। পাঁচ পৃষ্ঠার ওই জবানবন্দিতে তিনি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন আন্দোলন দমন, সরকারের সিদ্ধান্ত, নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা এবং তার নিজস্ব অবস্থান।
তিনি জানান, ৪ আগস্ট সকাল ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় নিরাপত্তা-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক। সেখানে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় আন্দোলনের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও সরকার পতন নিয়ে কেউ কথা বলেনি।
চৌধুরী মামুন বলেন,
সরকারের দুর্বলতা নিয়ে আমরা কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সরকার শুনতে রাজি ছিল না।
তিনি জানান, ওই রাতেই আরেকটি জরুরি বৈঠকে মাঠপর্যায়ে আন্দোলন মোকাবেলার কৌশল ঠিক করা হয়। ৫ আগস্ট সকাল ১০টা পর্যন্ত পুলিশ কড়া অবস্থানে থাকলেও পরে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করে। সেনাবাহিনী বাধা দেয়নি এবং মাঠপর্যায়ের সেনা সদস্যরা আন্দোলনকারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন বলে দাবি করেন মামুন।
তিনি বলেন, “দুপুরের মধ্যে বুঝতে পারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তখনই জানতে পারি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।” বিকেলে হেলিকপ্টারে তিনি সেনা মেসে আশ্রয় নেন বলেও জানান।
জবানবন্দির শেষে মামুন বলেন, “সরকারের নির্দেশে এবং অতিউৎসাহী পুলিশের মাধ্যমে বলপ্রয়োগ, নির্বিচার গুলি ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। এতে বহু হতাহত হয়েছে। সাবেক পুলিশপ্রধান হিসেবে আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী।”