জামায়াতের উত্তাপের পর রাজধানীজুড়ে প্রস্তুতি বিএনপির নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত
প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৩:৫০
জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রতিক সমাবেশকে ঘিরে পাল্টা কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করছেন, পাল্টা কর্মসূচিতে গেলে তা রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষকে গুরুত্ব দেওয়ার শামিল হবে এবং এতে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির গুরুত্ব কমে যেতে পারে। বিএনপি মনে করে, নিজেদের অবস্থান প্রমাণের কিছু নেই, কারণ দলটি ইতোমধ্যে দেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিএনপির মূল মনোযোগ ‘গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে ঘোষিত ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালনের দিকে। এ কর্মসূচির চূড়ান্ত পর্ব হিসেবে আগামী ৬ আগস্ট রাজধানীতে ‘বিজয় মিছিল’ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। বিএনপির পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই বিজয় মিছিল হবে ঢাকার সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ, যা জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলের কর্মসূচিকে ছাপিয়ে যাবে। বিএনপির নেতারা বলছেন, আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ও জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টিই তাদের মূল লক্ষ্য।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “জামায়াত শান্তিপূর্ণভাবে একটি সমাবেশ করেছে, এটা রাজনীতির জন্য ইতিবাচক। আমরা পাল্টা কোনো কর্মসূচি দিচ্ছি না। আমরা মাঠে আছি, তারাও মাঠে আছে এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।” এদিকে বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের নির্বাচনপূর্ব জোট গঠনের কোনো পরিকল্পনা নেই। বরং বিএনপি নিজস্ব রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদবিরোধী অবস্থান ও আগামী নির্বাচনের লক্ষ্যে নতুন জোট গঠনের পথে হাঁটছে।
তারা বলেন, জামায়াত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাইলেও বিএনপি বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন চায়। এজন্য জামায়াতের সোহরাওয়ার্দী সমাবেশে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, বরং জামায়াত তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান থেকে অন্যান্য ইসলামপন্থী দল ও পিআরপন্থীদের একত্রিত করতে তৎপর।
বর্ষপূর্তি কর্মসূচির বিস্তারিত
গত ৩০ জুন ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির আওতায় বিএনপি একের পর এক রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এর মধ্যে রয়েছে:
সবশেষে ৬ আগস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ‘বিজয় মিছিল’। এখনো নির্ধারিত হয়নি এটি একটি কেন্দ্রীয় মিছিল হবে, নাকি শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একযোগে মিছিল বের করা হবে। তবে যাই হোক, ঢাকায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “জুলাই-আগস্টের প্রতিটি দিন স্মরণীয়। আমরা প্রতিটি কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করছি। বিজয় মিছিল আমাদের এই গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত প্রকাশ।”