নির্বাচনের আগে ‘বিচার ও সংস্কার’ দাবি, নতুন সংবিধানের আহ্বান এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব তুলে ধরলেন এনসিপি নেতা
প্রকাশিত : ০৮ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৮:৪৮
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের একটি বড় অংশ একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছে, যা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী। সোমবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ শহরের মুক্তির সোপান চত্বরে এক পথসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন,
“আমরা গণঅভ্যুত্থানের পর একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন, পুলিশ ও বিচারব্যবস্থা চেয়েছিলাম। কিন্তু বাস্তবে দেখছি, প্রশাসনে যারা আছেন তারা দলীয় পক্ষপাতিত্বে জড়িত।”
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন,
“আপনারা নির্দিষ্ট কোনো দলের হয়ে কাজ করবেন না। জনগণের সেবা করুন, দমন নয়।”
নতুন সংবিধানের আহ্বান
নাহিদ ইসলাম বর্তমান সংবিধানকে বিভাজন সৃষ্টিকারী হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন,
“এ সংবিধান একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে ব্যর্থ। তাই আমাদের প্রয়োজন নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান, যেখানে থাকবে মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের চেতনার প্রতিফলন।”
নির্বাচনের আগে বিচার দাবি
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“যারা গণহত্যা চালিয়েছে, ভাইদের হত্যা করেছে তাদের বিচার না করে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। বিচার ও সংস্কারের পরেই নির্বাচন হতে হবে।”
সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প নিয়ে প্রতিশ্রুতি
সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন,
“এই শিল্প হতে পারত আমাদের গর্ব, কিন্তু সেটা আমরা বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে পারিনি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আগামীতে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্য ও শিল্পকে বৈশ্বিক পর্যায়ে তুলে ধরা হবে।”
তিনি আরও বলেন, জেলার মানুষের জন্য কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা এবং মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।
জুলাই ঘোষণাপত্র ও শহীদ পরিবার
পথসভায় নাহিদ ইসলাম জুলাই আন্দোলনের শহীদদের কথা স্মরণ করে বলেন,
এই শহীদদের পরিবারগুলোর রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শুধুমাত্র এই সরকার নয় যেই সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এ দায় এড়াতে পারবে না।
তিনি বলেন,
“আমরা জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদ পরিবারদের অধিকার সংরক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করব এবং সেটি সংবিধানে যুক্ত করা হবে।”
মতবিনিময় সভা
পথসভার পর জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে এনসিপি নেতাকর্মীরা মতবিনিময় করেন। সেখানে তাঁদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষার কথা শোনা হয় এবং সমর্থন জানানো হয়।