রাজনীতির মাঠে ফের চাপে সরকার, শাসনব্যবস্থায় ‘আস্থা সংকট’ দাবি
প্রকাশিত : ৩১ মে ২০২৫, ১:৫৯:৩৭
নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা
বর্তমান সরকারের নেতৃত্ব নিয়ে এবার সরাসরি প্রশ্ন তুলেছে নবগঠিত রাজনৈতিক জোট ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টি (NCP)।
দলটির মুখপাত্র এক জনসভায় বলেন, “এই সরকার জনআস্থা হারিয়েছে, প্রশাসন চলছে একচেটিয়া আদেশে। জনগণ আর চুপ থাকবে না।”
কী বললেন NCP নেতা?
NCP’র শীর্ষ নেতা ড. সাইফুর রহমান বলেন,
“নেতৃত্বের যে সংকট আজ দেশের সর্বত্র, সেটি জাতির জন্য অশনিসংকেত। রাষ্ট্র এখন দলীয় সিদ্ধান্তে নয়, একক সিদ্ধান্তে চলছে।”
তিনি আরও বলেন,“জনগণ ১৫ বছর ধরে সহ্য করেছে। এবার রাস্তায় নামবে, কারণ প্রশ্ন কেবল সরকারের নয়, রাষ্ট্রীয় ন্যায়ের।”
সরকারের প্রতিক্রিয়া
তথ্য প্রতিমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন,
“NCP এখনো ঠিকমতো জন্মই নেয়নি, তার আগেই হুমকির রাজনীতি শুরু করেছে। সরকার সবসময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী।”
তবে ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরেও নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্তে ‘মনোঃকষ্ট’ রয়েছে বলে অনানুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করছেন কয়েকজন তরুণ এমপি।
বিশ্লেষকের মত
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আনোয়ারুল হক বলেন,
“যে প্রশ্নটা আজ উঠছে তা হলো এককেন্দ্রিক নেতৃত্বের সীমা কোথায়? একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নেতৃত্ব মানে হচ্ছে দলীয় পরামর্শের সম্মিলিত প্রতিফলন। যদি তা না থাকে, তাহলে সেটি হয়ে ওঠে কর্তৃত্ববাদ।”
জনগণের প্রতিক্রিয়া
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জনমত যাচাই করতে গিয়ে জানা যায়,
৭১% মানুষ মনে করছেন, “বর্তমান সরকারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই।”
৫৩% মানুষ বিশ্বাস করেন, “দেশে বিকল্প নেতৃত্ব দরকার।”
একজন শিক্ষার্থী বলেন,“আমরা এমন নেতৃত্ব চাই, যারা কথা বলবে মানুষের কথা নিয়ে না যে শুধু টকশো তুমুল হবে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হবে না।”
নির্বাচন সামনে, উত্তপ্ত মাঠ
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: এই অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে?
নেতৃত্বের প্রশ্নে বিভক্তি থাকলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হওয়াই স্বাভাবিক।
NCP, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল একসঙ্গে মাঠে নামার ইঙ্গিত দিয়েছে, যা সরকারকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে।
নেতৃত্ব নয়, দৃষ্টিভঙ্গির সংকট?
এই পরিস্থিতি আমাদের ভাবতে বাধ্য করে আসলে সংকট কি শুধু নেতৃত্বের? নাকি সমস্যা গভীরে, দৃষ্টিভঙ্গির?
একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে ন্যায়ের ভিত্তিতে গঠিত নেতৃত্বের উপর। যদি জনগণ সেই নেতৃত্বে আস্থা না রাখে, তাহলে যত উন্নয়নই হোক রাষ্ট্র কাঠামোর ভিত নড়বড়ে হয়ে যায়।
এখন প্রশ্ন হলো সরকার কি সেই বাস্তবতা অনুধাবন করতে প্রস্তুত?