 
                            প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ৪:২৪:৩৮
বাংলাদেশ থেকে এক লাখের বেশি দক্ষ কর্মী নিয়োগের অগ্রগতি জানাতে জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভসের (এনবিসিসি) প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি) এবং স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্স (এসএসডব্লিউও) কর্মসূচির আওতায় এসব কর্মী নিয়োগ করা হবে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় ২৩ সদস্যের জাপানি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
এনবিসিসি হলো ৬৫টিরও বেশি কোম্পানির একটি জাপানি ব্যবসায়িক ফেডারেশন, যা সম্প্রতি দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুবিধার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওআই) স্বাক্ষর করেছে। চুক্তির লক্ষ্য হচ্ছে জাপানে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন এবং কর্মসংস্থানের জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা।
প্রতিনিধিদলের তথ্য অনুযায়ী, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় প্রথম ধাপে আগামী বছর দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগ করা হবে। পরবর্তীতে ২০২৭ সালে ছয় হাজার এবং ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্মাণ, সেবা, এভিয়েশন, গার্মেন্টস ও কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি কর্মীর প্রয়োজন। ভবিষ্যতে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং খাতেও দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়বে।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে সম্ভাব্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রতিনিধিদল কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করে প্রশিক্ষণের মান ও ঘাটতি যাচাই করেছেন।
এনবিসিসির চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, ‘সাত মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা খুবই সন্তুষ্ট এবং আশা করি আগামী বছরই দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে। তবে ভাষাগত দক্ষতায় উন্নতি করা গেলে আরও ভালো হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভাষাগত দক্ষতা অর্জনই বড় চ্যালেঞ্জ। জাপান থেকে অনলাইনে ভার্চুয়াল ক্লাস নেয়া যেতে পারে। এছাড়া প্রশিক্ষকদের বাংলাদেশে এনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করা যেতে পারে।’
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের নারীদের দক্ষতা ও পরিশ্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘কেয়ারগিভিং সেক্টরে বাংলাদেশের নারীরা অনন্য। ভাষাগত দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ পেলে তারা জাপানে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।’
এনবিসিসি প্রতিনিধিরা জানান, আগামী কয়েক বছরে জাপানে ৪ লাখের বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে এবং বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নার্স নিয়োগের বিষয়ে তারা বিবেচনা করবেন।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকার জাপানে কর্মী নিয়োগে অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে এবং একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করবে। এছাড়া, সমস্যার সমাধানের জন্য একটি নির্দিষ্ট সেল গঠন করা হয়েছে।’