 
                            প্রকাশিত : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ৬:৫৮:৫৩
বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে কমছে, তবে বিপরীতে মাদ্রাসায় ভর্তি বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকস (ব্যানবেইস) প্রকাশিত শিক্ষা পরিসংখ্যান ২০২৪ প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম নিউ এইজ এ খবর জানিয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, চার বছরে (২০২০-২০২৪) দেশের স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী কমে গেছে, যেখানে একই সময়ে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় আড়াই লাখ।
২০২০ সালে স্কুলে শিক্ষার্থী ছিল এক কোটি দুই লাখেরও বেশি, কিন্তু ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ৯০ লাখ ৬৩ হাজার ৪২২ জনে। অপরদিকে, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ লাখে।
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, দেশের ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, সাধারণ শিক্ষার বাড়তি খরচ, শিশু শ্রমের বিস্তার এবং ধর্মীয় প্রভাব—এসবই এই পরিবর্তনের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. মঞ্জুর আহমেদ জানান, এখন সাধারণ শিক্ষার খরচ মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ মাদ্রাসাগুলো তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়বহুল, ফলে অনেক পরিবার সেদিকেই ঝুঁকছে।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক রিপোর্টেও দেখা যায়, দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ২১.২ শতাংশে পৌঁছেছে। অন্যদিকে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১৮.৭ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও আয় সংকটের ফলে অনেক পরিবার সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিচ্ছে বা বিকল্প পথ, যেমন মাদ্রাসা বা কাজ শেখার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক শ্রমবাজারেও বড় ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। সৌদি আরব ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও ওমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো এখন অনেকটাই বন্ধ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার পরও গত এক বছরে এই বাজারগুলো পুনরায় খোলার কোনো সম্ভাবনা দেখা যায়নি।