রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচনের আশ্বাস দিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাপা নিষিদ্ধ ইস্যুতে ভিন্নমত বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির।
 
                            প্রকাশিত : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:৫৩:১৩
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ন্যাশনাল কনসেন্সাস পার্টি (এনসিপি)। রবিবার (৩১ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরার ‘যমুনা’তে তাঁর বাসভবনে পৃথক বৈঠকে দলগুলো নির্বাচনের সময়সূচি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, নুরুল হক নুরের ওপর হামলা এবং জাতীয় পার্টিকে (জাপা) নিষিদ্ধ করার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে। জামায়াত ও এনসিপি জাপা নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দেয়, তবে বিএনপি জানায় তারা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে।
নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ। তিনি সতর্ক করে বলেন, “নির্বাচনের বিকল্প কোনো চিন্তা জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক হবে।”
বিএনপির অবস্থান
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। তবে নুরুল হক নুরের ওপর হামলা উদ্বেগজনক, একটি মহল নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র করছে।” বিএনপি জানায়, তারা জুলাই সনদের ব্যাপারে অটল আছে, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিপক্ষে এবং জাতীয় ঐক্যের পক্ষে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।
জামায়াতের দাবি
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই সনদ আইনি ভিত্তি না পেলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। তিনি গণভোটের প্রস্তাব দেন। এ দলটি জাপা নিষিদ্ধ করার পক্ষে অবস্থান জানায়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার, রফিকুল ইসলাম খান ও ডা. হামিদুর রহমান আযাদ।
এনসিপির প্রস্তাব
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে গণপরিষদ নির্বাচন দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। তারা জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবি তোলে এবং গুম কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ, হান্নান মাসউদ ও তাসনিম জারা।
নুরের ওপর হামলা ও তদন্ত
গত শুক্রবার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের হাতে মারধরের শিকার হন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ঘটনাটি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সরকার এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া সব রাজনৈতিক দলই হামলার নিন্দা জানায় এবং দোষীদের বিচারের দাবি করে।