একাধিক ভুয়া হুমকিতে বিমান চলাচলে বিঘ্ন, র্যাবের অভিযানে তিনজন গ্রেফতার
প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২৫, ২:৩৮:১৩
ঢাকা, ১৫ জুলাই ২০২৫
রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশ সম্প্রতি বারবার ভুয়া বোমা হামলার হুমকির টার্গেট হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি একটি সুপরিকল্পিত চক্রের কাজ, যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিমান সংস্থাটির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে চাইছে। চলতি বছরেই অন্তত তিন থেকে চারবার এ ধরনের ভুয়া বার্তা ছড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল মাসুদ খান জানান, “বিভিন্ন সময়ে আমাদের ফ্লাইটে বোমা থাকার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। প্রতিবারই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল দিয়ে তল্লাশি করা হয়েছে। কিন্তু কোনওবারই সেসব তথ্য সত্য হয়নি।”
সর্বশেষ গত শুক্রবার ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইট বিজি ৩৭৩-এ বোমা রয়েছে বলে ফোনে জানানো হলে, বিমানটি আটকে দেওয়া হয়। যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপদে সরিয়ে ফেলা হয় এবং চার ঘণ্টা তল্লাশির পর কোনও বোমা না পেয়ে ফ্লাইটটি আবার ছেড়ে যায়। পরে র্যাব অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে এবং মামলা দায়ের করা হয়।
এর আগে ২২ জানুয়ারি রোম থেকে আসা বিজি ৩৫৬ ফ্লাইটের ভেতরে বিস্ফোরক রাখার তথ্য দিয়ে হুমকি দেওয়া হয় একটি পাকিস্তানি নম্বর থেকে। পরে সেটিও মিথ্যা প্রমাণিত হয়। একইভাবে মালয়েশিয়ার একটি নম্বর থেকে আরেকবার বিমানবন্দর এলাকায় বোমা থাকার গুজব ছড়ানো হয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), বিমানবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী প্রতিটি ঘটনাতেই সতর্কতামূলক তল্লাশি চালায়। কিন্তু এই ভুয়া বার্তাগুলোর ফলে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন,
“এ ধরনের বোমাতঙ্ক শুধু বাংলাদেশেই নয়, অন্যান্য দেশেও ঘটে। কিন্তু যারাই এই ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
বিমানবন্দর নিরাপত্তা ইউনিটের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “আমরা ডগ স্কোয়াড, বোম্ব ডিসপোজাল টিম, সিআরটি ও প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। কিন্তু দেশের ভেতর থেকে এমন হুমকি এলে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হলেও, বিদেশি নম্বর থেকে এলে তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।”