অফিসে শান্তি চাইলে মানিয়ে নয়, চাই কৌশলী অবস্থান
প্রকাশিত : ০৩ জুলাই ২০২৫, ১:০২:৩০
প্রতিদিন অফিসে যান। কাজ করেন মন দিয়ে। অথচ পাশের সহকর্মীটির ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য, সাফল্যে ঈর্ষা বা পেছনে কথা বলার অভ্যাস দিনকে দিন আপনাকে দুর্বল করে তুলছে। এমন টক্সিক আচরণ কর্মস্থলে চুপিসারে তৈরি করে বিষাক্ত পরিবেশ যা অদৃশ্যভাবে কমিয়ে দেয় আপনার কর্মস্পৃহা ও আত্মবিশ্বাস। গবেষণা বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮০% কর্মজীবী কোনও না কোনও সময় কর্মক্ষেত্রে টক্সিক আচরণের শিকার হন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পরিবর্তন শুরু করতে পারেন আপনি নিজেই। "টক্সিক মানুষের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া নয়, কৌশলে দূরত্ব গড়াই বুদ্ধিমানের কাজ।" মুনতাসীর হায়দার, মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ
৭টি বাস্তবমুখী কৌশল
১. সীমা টানুন
আপনি কাকে কী বলবেন, সেটা নিজেই ঠিক করুন। পেশাদার যোগাযোগে ব্যক্তিগত আলোচনা কমান।
2.লিখিত প্রমাণ রাখুন
টেক্সট, ইমেইল বা চ্যাট যা-ই হোক, গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন সংরক্ষণ করুন ভবিষ্যতের প্রয়োজনে।
3.নির্বিকার থাকার অভ্যাস গড়ুন
প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন। এতে মানসিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।
4.সহমত খুঁজুন, বিরোধ নয়
কৌশলীভাবে কথার জবাব দিন যাতে সম্পর্ক নষ্ট না হয়, কিন্তু সম্মান বজায় থাকে।
5.ইকো সিস্টেম তৈরি করুন
অফিসের ইতিবাচক সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধন গড়ে তুলুন। একা থাকার চেয়ে দলবদ্ধ মানসিক শক্তি বেশি কার্যকর।
6.ম্যানেজমেন্টকে জানান
সমস্যা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, প্রমাণসহ বিষয়টি নির্ভরযোগ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান।
7.নিজেকে ভালোবাসুন
মেডিটেশন, বই পড়া বা ছুটিতে ঘুরে আসা আপনার মানসিক প্রশান্তি ও আত্মবিশ্বাস রক্ষা করতে সাহায্য করে।মনোবিদ কী বলছেন?
ডা. শারমিন তানিয়া, কর্মজীবী নারীদের নিয়ে কাজ করা মনোবিজ্ঞানী, বললেন “টক্সিক কর্মপরিবেশে দীর্ঘদিন থাকা মানে ধীরে ধীরে নিজের আত্মবিশ্বাস হারানো। তাই সময় থাকতে নিজের জন্য দাঁড়ানো প্রয়োজন।”
বিশ্বজুড়ে করপোরেট হেলথ ট্রেন্ড
মাইক্রোসফট, অ্যামাজন কিংবা গুগলের মতো বিশ্বমানের করপোরেট প্রতিষ্ঠানেও এখন চালু রয়েছে Workplace Positivity Program। কারণ, প্রমাণিত সত্য একজন বিষাক্ত সহকর্মী পুরো টিমের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে প্রায় ৩০%।
শেষ কথা
সহকর্মী বদলাতে না পারলেও আপনি নিজের প্রতিক্রিয়া বদলাতে পারেন। টক্সিক আচরণ মোকাবেলায় কৌশলই একমাত্র অস্ত্র শব্দ নয়, বুদ্ধি দিয়ে এই লড়াইটা জয় করুন নিজের জন্য।
“যে সম্পর্ক আপনাকে বিষাক্ত করে তোলে, তা যত কাছেরই হোক—সীমা টানাই শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত।” সাবিনা আক্তার, করপোরেট কোচ