পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও কাঁচা দুধ খাওয়ার ঝুঁকি কম নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া এটি হতে পারে নানা রোগের বাহক।
 
                            প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩:৫৭:০২
বাংলার গ্রামীণ জীবনে গাভীর দুধ দোহন করে সরাসরি পান করার সংস্কৃতি নতুন নয়। অনেকেই বিশ্বাস করেন, কাঁচা দুধ খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধারণা সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। কাঁচা দুধে সালমোনেলা, ই-কোলাই কিংবা টিবি-সৃষ্টিকারী জীবাণু থাকতে পারে, যা সরাসরি শরীরে প্রবেশ করলে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
"কাঁচা দুধ যতটা প্রাকৃতিক মনে হয়, এর ভেতরে ততটাই লুকিয়ে থাকতে পারে মারাত্মক জীবাণু।"
ডা. নাসরিন আক্তার, পুষ্টিবিদ, জানান, “দুধ আসলেই পুষ্টিগুণে ভরপুর। কিন্তু ফুটিয়ে বা পাস্তুরাইজ না করলে তা শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।” তিনি আরও বলেন, “অনেকে মনে করেন গরম করলে ভিটামিন নষ্ট হয়, বাস্তবে কিন্তু দুধের মূল পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।” বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাঁচা দুধ খাওয়ার কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো উন্নত দেশগুলোতে কাঁচা দুধ বিক্রিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে ইউরোপের কিছু গ্রামীণ অঞ্চলে এখনও ঐতিহ্য ধরে রাখতে মানুষ এটি খেয়ে থাকেন।
বাংলাদেশেও শহরের বাজারগুলোতে পাস্তুরাইজড দুধের ব্যবহার বেড়েছে। তবে গ্রামে অনেকেই এখনও কাঁচা দুধ খাওয়াকে স্বাভাবিক মনে করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানে প্রয়োজন সচেতনতা তৈরি করা।
এশিয়ার পাশাপাশি আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতেও কাঁচা দুধ খাওয়ার প্রবণতা আছে। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলছে, দুধ ফুটিয়ে বা পাস্তুরাইজ করে খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।