কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী কিমচি এবার ঘরের কিচেনেই। শেফ বনিফাসের ঝাল-ঝাঁজালো রেসিপিতে বাঙালির নোনতা প্রেমে নতুন মাত্রা।
প্রকাশিত : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১:৫৮:৩০
বাংলা কিচেনে নতুন ঝোঁক মানেই আন্তর্জাতিক ফিউশন! এই ধারার সাম্প্রতিক সংযোজন কোরিয়ান কিমচি। ঢাকার নামকরা ফুড স্টুডিওতে আয়োজিত এক কুকিং ওয়ার্কশপে অংশ নিয়ে বাঙালির চেনা রান্নায় কোরিয়ান হাওয়া লাগালেন শেফ বনিফাস চো। কোরিয়া থেকে এসে বাংলাদেশে বসবাস করা এই শেফ এখন বাংলা খাবারের প্রেমে পড়ে নিজেই তৈরি করছেন আন্তর্জাতিক-ঘরোয়া ফিউশন।
কিমচির ব্যতিক্রমী যাত্রা
প্রথাগতভাবে কিমচি হলো একধরনের ফারমেন্টেড সবজি, বিশেষ করে বাঁধাকপি, যার সঙ্গে রসুন, আদা, মরিচ ও নুন মিশিয়ে দিনের পর দিন রেখে দেওয়া হয়। এতে তৈরি হয় একধরনের টক-ঝাল স্বাদ, যা কোরিয়ানদের প্রতিদিনের খাবারের অপরিহার্য অংশ। শেফ বনিফাস বলেন, “কিমচি শুধুই খাবার নয়, এটি কোরিয়ান সংস্কৃতির পরিচায়ক। কিন্তু আমি চাই বাঙালিরা এটি নিজেদের স্বাদে রূপান্তর করুক। আর তাই আমি যোগ করেছি কাঁচামরিচ, একটু সরিষার তেল আর ভাজা সরষে দেখবেন, ভাতের সঙ্গে জমে উঠবে।”
রেসিপি: বাংলা কিমচি স্টাইল
উপকরণ:
প্রণালি:
১. বাঁধাকপি লবণ দিয়ে হালকা ম্যারিনেট করে রাখতে হবে ১ ঘণ্টা।
২. এরপর পানি ঝরিয়ে নিয়ে মিশিয়ে দিন রসুন, আদা, কাঁচামরিচ, সরষে বাটা, ভিনেগার ও সামান্য চিনি।
৩. সবশেষে সরিষার তেল দিয়ে মিশিয়ে বয়ামে ভরে রাখুন ২-৩ দিন।
এই মিশেলেই জন্ম নেবে বাংলা ঘরানার কিমচি, যার স্বাদ হবে ঘরোয়া, অথচ একদম গ্লোবাল!
আন্তর্জাতিক রন্ধন নিয়ে অভিজ্ঞ মত
ঢাকা রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি শামিম রায়হান বলেন, “এই ধরনের রেসিপি বাঙালি রান্নাকে একধরনের বিশ্বনাগরিকতার অংশ করে তোলে। কিমচির মতো পদ যদি স্থানীয় স্বাদের সঙ্গে মানিয়ে যায়, তবে এটি হবে ভবিষ্যতের ফিউশন কিচেনের দিশা।”
পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এগিয়ে
কিমচি শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিতেও অনন্য। ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় এতে জন্মায় প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া, যা হজমে সাহায্য করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই এই পদ শরীরের জন্য যেমন ভালো, তেমনি মুখরোচকও।
“কিমচি খেলে শুধু জিভ না, মনটাও টক-ঝাল করে জেগে ওঠে!” শেফ বনিফাস চো
টক-ঝাল-ঝাঁজালো এই তিনেই বাঙালির ভালোবাসা। আর সেই ভালোবাসা যদি পায় কোরিয়ার কিমচির স্পর্শ, তবে তা হয়ে ওঠে একেবারে অনন্য। রান্নাঘরের বয়ামে রাখা কিমচির সেই গন্ধ আর স্বাদ আজ বলে দিচ্ছে বিশ্ব এখন এসে পড়েছে বাংলা কিচেনেও।