দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন ১০ হাজার মামলার রায় দিতে উদ্যোগী হাইকোর্ট বিচার ব্যবস্থায় গতি ফেরানোর বার্তা স্পষ্ট।
প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:১২:৩৯
ন্যায়বিচারে গতি আনতেই হাইকোর্টের বিশেষ পদক্ষেপ, ২০ জুলাই থেকে শুনানি শুরু
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা ১০ হাজারেরও বেশি মামলার নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিচার বিভাগ। বহু পুরনো এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আগামী ২০ জুলাই ২০২৫ থেকে আনুষ্ঠানিক শুনানি শুরু হচ্ছে।
এই বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০০০ সালের আগের দায়েরকৃত ১০ হাজার ৩৮৫টি পুরনো মামলা বাছাই করে সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারসম্পন্ন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের ১০ জুলাইয়ের নির্দেশনার আলোকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত দেশের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পথে এক বড় অগ্রগতি হিসেবে কাজ করবে।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি বলেন, "এটা অবশ্যই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এখনও হাইকোর্টে ১৯৯৭ বা ১৯৯৮ সালের মামলাও ঝুলে আছে। বিশেষ করে ফৌজদারি মামলায় স্থগিতাদেশ (স্টে) দিয়ে বছরের পর বছর কোনো শুনানির উদ্যোগ না নেওয়ায় মামলাগুলো জমে আছে। এতে করে সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট হয়, সাক্ষী হারিয়ে যায়। এই উদ্যোগ এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।" আরেক সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ বলেন, "এই উদ্যোগ ন্যায়বিচার পেতে দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকা বিচারপ্রার্থীদের জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে। আশা করছি, এমন কার্যকরী পদক্ষেপ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।" প্রসঙ্গত, মামলাজট বাংলাদেশের বিচার বিভাগে দীর্ঘদিনের একটি বড় সমস্যা। সরকারের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও পুরনো মামলা নিষ্পত্তির হার আশানুরূপ হয়নি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই উদ্যোগ যদি সময়মতো বাস্তবায়ন হয়, তবে অধস্তন আদালতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল নির্দেশনা দিলেই হবে না, পুরনো মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং প্রশাসনিক প্রস্তুতিও থাকা জরুরি।
এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ তার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি প্রতিশ্রুতিকে নতুনভাবে তুলে ধরছে।
এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে, দুই যুগ আগের ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় থাকা হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলেই আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।