চিকুনগুনিয়ার দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা: করণীয় কী বলছেন চিকিৎসকেরা?
প্রকাশিত : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১:০৯:১৬
বর্ষাকালে মশাবাহিত রোগগুলোর মধ্যে চিকুনগুনিয়া অন্যতম আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও জ্বর ও তীব্র ব্যথার মাধ্যমে এটি শুরু হয়, কিন্তু সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও যন্ত্রণাদায়ক দিক হলো জয়েন্ট বা হাড়ের ব্যথা, যা রোগ সেরে যাওয়ার পরেও দীর্ঘ সময় ধরে থেকে যায়।
চিকিৎসকদের মতে, চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক রোগীর শরীরে আর্থ্রাইটিসের মতো জয়েন্ট ব্যথা দেখা যায়, যা কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এক্ষেত্রে দ্রুত সেরে উঠতে কিছু করণীয় বিষয় তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্যথা উপশমে যা করণীয়
বিশ্রাম ও হাইড্রেশন অপরিহার্য
রোগের প্রথম পর্যায়ে শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ে, তাই প্রয়োজন পর্যাপ্ত বিশ্রাম। চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি, ডাবের পানি বা লবণ-চিনিযুক্ত পানীয় পান করার জন্য, যাতে শরীর হাইড্রেট থাকে।
ব্যথা নিয়ন্ত্রণে প্যারাসিটামল
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল জাতীয় ব্যথানাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অনেকেই আইবুপ্রোফেন বা ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকেন, যা ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা।
গরম বা ঠাণ্ডা সেঁক
ব্যথার জায়গায় গরম পানির সেঁক দেওয়া ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে হাটু, কাঁধ বা হাতের জয়েন্টে গরম প্যাড বা তোয়ালে ব্যবহার করা যায়। কেউ কেউ ঠাণ্ডা সেঁকেও আরাম পান।
হালকা ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপি
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি বা হালকা স্ট্রেচিং উপকারী হতে পারে। তবে তীব্র ব্যথা থাকলে প্রথম দিকে এসব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তারা।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার। বিশেষ করে ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার জয়েন্ট ব্যথা প্রশমনে ভূমিকা রাখে।
চিকিৎসকের পরামর্শ: কখন হাসপাতালে যাবেন?
বিশেষজ্ঞরা বলেন, জ্বর যদি ৫ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, কিংবা ব্যথা সহ্য করার বাইরে চলে যায়, তখন অবশ্যই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। তাছাড়া যদি জয়েন্ট ফুলে যায়, লালচে হয়ে যায়, বা চলাফেরায় সমস্যা হয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।