প্রকাশিত : ০৩ জুন ২০২৫, ২:১৮:১৯
ঢাকায় চালু হলো দেশের প্রথম শিশু কার্ডিয়াক সেন্টার, যা বদলে দেবে ছোট রোগীদের জীবনযাত্রা।
উন্নত প্রযুক্তি ও দক্ষ চিকিৎসকদের হাত ধরে শিশুরা পাচ্ছে বিশেষায়িত হৃদরোগ সেবা।
“একটি শিশু যখন সুস্থ হৃদয়ে হাসে, তখন পুরো সমাজের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়,” ডা. মেহেদী হাসান, কার্ডিয়াক সার্জন
বাংলাদেশে শিশু হৃদরোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো দেশের প্রথম বিশেষায়িত শিশু হৃদরোগ হাসপাতাল। রাজধানীর এই আধুনিক কেন্দ্রটি শিশুর জন্য উপযোগী চিকিৎসা, প্রযুক্তি ও পুনর্বাসন সেবার এক পূর্ণাঙ্গ সমাধান হিসেবে কাজ করবে।
লোকাল গল্প: ৬ বছরের আয়েশা রহমানের হৃদরোগ ধরা পড়ার পর তার পরিবার দীর্ঘদিন হতাশায় ভুগছিল। কিন্তু শিশু হৃদরোগ বিশেষ হাসপাতাল চালুর পর সেখানে অপারেশন করিয়ে সে এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। আয়েশার মা বলেন,
“এমন একটা কেন্দ্র আমাদের মতো পরিবারদের জন্য আশীর্বাদ। ছেলে এখন স্কুলে গিয়ে খেলাধুলা করছে, যা আগে সম্ভব ছিল না।”
আধুনিক প্রযুক্তি ও ডাটা
বিশ্বজুড়ে শিশু হৃদরোগে মৃত্যুহার এখনও একটি বড় সমস্যা, কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে অপারেশন সফলতার হার ৯৫% ছাড়িয়ে গেছে। দেশের এই হাসপাতালটি রোবোটিক সার্জারি, ইমেজিং প্রযুক্তি এবং বিশেষায়িত কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত।
সরকারি স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার শিশু হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং তাঁদের সঠিক চিকিৎসার অভাব নানা জটিলতার সৃষ্টি করছে। এই নতুন হাসপাতাল শিশুদের জন্য সেই ফাঁক পূরণ করবে।
সামাজিক প্রভাব ও প্রশ্ন:
এই হাসপাতাল শুধু চিকিৎসা নয়, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও কাজ করবে, যার ফলে ভবিষ্যতে আরও দক্ষ কার্ডিয়াক চিকিৎসক গড়ে উঠবে।
দেশে শিশু হৃদরোগের বিশেষ হাসপাতাল চালু হওয়া একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি শুধুমাত্র অসুস্থ শিশুদের জন্য নয়, পুরো পরিবারের এবং সমাজের জন্য আশার আলো। তবে এই উন্নত সেবা যেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও পৌঁছায়, এজন্য প্রযুক্তি ও সরকারি নীতিতে সমন্বয় আনা আবশ্যক। কারণ শিশুরা হল জাতির ভবিষ্যৎ, আর তাদের সুস্থ হৃদয়ই এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার বুনিয়াদ। শিশু হৃদরোগের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে প্রযুক্তি ও মানবিকতা একসঙ্গে মিলেই পারে চূড়ান্ত সাফল্য।