 
                            প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৩:২৯
দিন দিন ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি করতে না পারলে রক্তের সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। তখনই মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শরীর চর্চা ও নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ছাড়া ঘরোয়া উপায়েও নিয়ন্ত্রণ করা যায় এ রোগ।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ বুঝতে পারলে ঘরোয়া উপায়ে এর প্রতিকার সম্ভব। এসব লক্ষণের মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব ও পিপাসা লাগা, দুর্বল ও ঘোর ঘোর ভাব আসা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, রক্তের শর্করা কমে যাওয়া, মিষ্টিজাতীয় খাবারের ওপর ঝোঁক বেড়ে যাওয়া, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, দীর্ঘদিনেও ক্ষত বা কাটাছেঁড়া না সারা, চামড়া শুষ্ক ও খসখসে হওয়া, চামড়ায় চুলকানি ভাব হওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, চোখে কম দেখা।
ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময় করা কখনোই সম্ভব নয়। তবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়। কিছু ঘরোয়া উপায়ে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
চলুন, একনজরে দেখে নেওয়া যাক যেসব পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়—
হাঁটাহাঁটি করা
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্য হাঁটাহাঁটি করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আমাদের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করার প্রবণতা অনেকটা কমে গেছে। আর এ কারণেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন হয়তো বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন নিয়ম করে এক ঘণ্টা হাঁটার পাশাপাশি ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে ডায়াবেটিস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।
জীবনধারা পাল্টানো
বংশগতভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা থাকে। যেমন অনেকের মা-বাবা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকেন। তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই জীবনযাপনের ধরন পাল্টানো দরকার। এসব পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে প্রতিদিন নিয়ম করে সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া, সকালে ঘুম থেকে ওঠা এবং রাতে সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া। সেই সঙ্গে হাঁটাচলা বেশি বেশি করা, মিষ্টিজাতীয় খাবার, ফাস্টফুড ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শরীরের জন্য যেমন ভালো, তেমনি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী। স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে রয়েছে শাকসবজি, ফল, বিন্স এবং মোটা দানার খাদ্যশস্য। এ ছাড়া স্বাস্থ্যকর তেল ও বাদাম খেতে পারেন। পাশাপাশি যেসব মাছে ওমেগা থ্রি তেল আছে, সেসব মাছ বেশি বেশি খেতে পারেন।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা
ধূমপান ও মদ্যপানের কারণে শুধু ডায়াবেটিস নয়; শরীরে আরও অনেক রোগ বাসা বাঁধতে পারে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে যেসব অভ্যাস সবার আগে বাদ দিতে হবে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস। কারণ, এ অভ্যাসগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করা
ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো স্থূলতা বা অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়া। মিষ্টিজাতীয় খাবার, ফাস্টফুড, কোমল পানীয় ও ভারী খাবার স্থূলতার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। তাই শরীরের ওজনের দিকে লক্ষ রাখতে হবে যেন কোনোভাবেই অতিরিক্ত ওজন বা মুটিয়ে না যান।
রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখা
যাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তাদের বছরে একবার হলেও পরীক্ষা করানো উচিত। যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া। সেই সঙ্গে বছরে অন্তত একবার লিপিড প্রোফাইল ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও পরীক্ষা করে দেখা উচিত।
সূত্র : বিবিসি