মশাবাহিত রোগের বিস্তার, স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগ সীমিত; আতঙ্কে নগরবাসী
প্রকাশিত : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:০৬:৫৯
করোনার ধাক্কা সামাল দিলেও এবার তিন ধরনের জ্বরে বিপর্যস্ত চট্টগ্রামের মানুষ। এই মৌসুমে সাধারণ ভাইরাস জ্বর ছাড়াও ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে শহর ও গ্রামে। এর মধ্যে চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবুল ফয়সাল মো. নুরুদ্দিন চৌধুরী বলেন,
রোগীদের অধিকাংশই শেষ পর্যন্ত চিকুনগুনিয়া পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডা. এইচএম হামিদুল্লাহ মেহেদী জানান, জ্বরের রোগীদের ৮০ শতাংশেরই চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। পরীক্ষা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকে পরীক্ষা না করেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চলতি বছরে চট্টগ্রামে ১৩৪৩ জন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫২ জন এবং মারা গেছেন ১৩ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২৭ জন, মৃত্যুর সংখ্যা ৯।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, “মশা নিধনে চার মাসব্যাপী লার্ভিসাইড ও ফগিং কার্যক্রম চলছে।” মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহী জানান, “২১০ জন কর্মী ও ছয়টি স্পেশাল টিম ৪১টি ওয়ার্ডে ওষুধ ছিটাচ্ছেন।”
নগরবাসীর অভিযোগ, ওষুধ ছিটানো কম, বিভিন্ন এলাকায় জমে থাকা পানিতে বাড়ছে মশার প্রজনন। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার উদ্বেগ বাড়ছে।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, জ্বর হলে ব্যথানাশক ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “চিকুনগুনিয়া-ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের প্রস্তুতি আছে, প্রয়োজন জনসচেতনতা।”
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)-এর অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশীদ বলেন, “মশার কামড় থেকে বাঁচলে এই রোগগুলো থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সচেতনতাই মূল অস্ত্র।”