স্বাস্থ্যই সম্পদ, আর হাঁটাই সেই সম্পদের মূল চাবিকাঠি দ্রুত হাঁটার নিয়মিত অভ্যাস বদলে দিতে পারে জীবন
প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০২৫, ২:৩০:৩৩
আজকের ব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন নিয়মিত শরীরচর্চার জন্য সময় বের করা কঠিন। কিন্তু দুঃসংবাদ নয় বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালের একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, মাত্র ১৫ মিনিট দ্রুত হাঁটলেই পাওয়া যায় বহু স্বাস্থ্যগত সুবিধা। হাঁটা কেবল শারীরিক ব্যায়াম নয়, এটি মস্তিষ্কের জন্য একটি প্রাকৃতিক স্টিমুলেন্ট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশনা অনুসারে, বয়স্ক থেকে তরুণ সবার জন্য দৈনিক ১৫ থেকে ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডাঃ রাহুল দেবনাথ, ফিজিওথেরাপিস্ট ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, বলেন, “দ্রুত হাঁটা হার্টের জন্য খুব ভালো, এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে।” দ্রুত হাঁটার মাধ্যমে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বেরিয়ে যায়, পাশাপাশি মস্তিষ্কে ‘হ্যাপি হরমোন’ সেরোটোনিন ও এন্ডোরফিনের নিঃসরণ বাড়ে। ফলে মেজাজ ভালো থাকে, ডিপ্রেশন কমে এবং মানসিক চাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাঁরা প্রতিদিন ১৫ মিনিট দ্রুত হাঁটেন, তাঁদের হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যান্যদের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম। এছাড়া হাঁটা ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও উন্নত করে। বিশ্বখ্যাত ধ্যান ও যোগ বিশেষজ্ঞ সুধীন্দ্রনাথ ঘোষের মতে, “দ্রুত হাঁটা মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য উপকারী। হাঁটার সময় নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রতি মনোযোগ দিলে ধ্যানের মতো কাজ হয়।” অনেক দেশে হাঁটার সংস্কৃতি এতটাই জনপ্রিয় যে, ‘ওয়াকিং গ্রুপ’ গড়ে ওঠে, যেখানে সদস্যরা একসঙ্গে হাঁটেন, নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এর ফলে সামাজিক সংযোগও বৃদ্ধি পায় যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
“শরীর আর মনের জন্য সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হল দ্রুত হাঁটা এটি জীবনকে নতুন করে সাজিয়ে দেয়।”
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে যেখানে আমরা অনেক সময় বসে কাজ করি, হাঁটা আমাদের শরীরকে সচল রাখার সহজতম মাধ্যম। তাই আজ থেকেই শুরু করুন প্রতিদিনের ১৫ মিনিট দ্রুত হাঁটা, এবং দেখুন স্বাস্থ্য ও মনের অবাক করা পরিবর্তন।
শেষ কথা:
জীবনের ব্যস্ততায় হারিয়ে যাওয়া সুস্থতার সন্ধান আর কঠিন নয়। প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিটের দ্রুত হাঁটা, যা যে কোনো বয়সেই শুরু করা যায়, তা আপনার স্বাস্থ্যকে দেবে নতুন প্রাণ, জীবনকে করে তুলবে সুখী ও দীপ্তিময়।