একবারের উড়ান মানেই বাতাসে যুক্ত হচ্ছে কয়েক কেজি কার্বন!
প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৫, ১২:০১:০৫
একবারের উড়ান মানেই বাতাসে যুক্ত হচ্ছে কয়েক কেজি কার্বন! আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এসেছে যাত্রীপ্রতি দূষণের ভয়াবহ পরিসংখ্যান।
বিমানভ্রমণ: আরামের নাম, না পরিবেশের বোঝা?
বর্তমান বিশ্বে ভ্রমণ, ব্যবসা ও অভিবাসনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে বিমান। কিন্তু গবেষণা বলছে, এই আধুনিক যাতায়াতই বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের অন্যতম উৎস। International Council on Clean Transportation (ICCT) জানায়, ২০২৩ সালে শুধু বিমান শিল্প থেকে পৃথিবীতে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন টন CO₂ নিঃসরণ হয়েছে।
একজন যাত্রীর ‘কার্বন বিল’ কত?
- ঢাকা থেকে কক্সবাজার একবার যাতায়াতে যাত্রীর গড় CO₂ নিঃসরণ: ৫০–৬০ কেজি
- ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর: প্রায় ৫০০ কেজি
- ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক (একটি রিটার্ন টিকিট): প্রায় ২.৫ টন কার্বন
উল্লেখ্য, একজন গড় মানুষের বার্ষিক কার্বন নিঃসরণ ২.৩ টনের মধ্যে সীমিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে IPCC। কিন্তু একবার বিমানে আন্তর্জাতিক ভ্রমণেই তা পার হয়ে যায়।
কেন এত কার্বন ছাড়ে বিমান?
- জ্বালানি: অ্যাভিয়েশন টারবাইন ফুয়েল (ATF) অত্যন্ত কার্বনঘন।
- বিপুল খরচ: একবার টেকঅফের সময় সবচেয়ে বেশি জ্বালানি পোড়ে।
- লং হল ফ্লাইট: যতো বড় দূরত্ব, ততো বেশি কার্বন নিঃসরণ।
- বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট: বিমানবন্দরে ভিড় বাড়ছে, দূষণও!
বিমান চলাচলের সংখ্যা এবং যাত্রীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ২০২৪ সালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গড়ে প্রতিদিন ১২০টির বেশি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। তবে এই ব্যবস্থায় নেই কোন কার্বন অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থা বা ইকো ট্যাক্স। বিমান চলাচলে পরিবেশ ভাবনার অনুপস্থিতি বাংলাদেশের জলবায়ু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন বলেন: “এয়ার ট্রাভেল যতটা প্রয়োজনীয়, তার চেয়ে বেশি হয়ে উঠেছে ‘নিয়মিত বিলাসিতা’। পরিবেশের খাতায় প্রতিটি ফ্লাইটের দায় রয়েছে—এই সচেতনতা এখনই জরুরি।”
সমাধান কী হতে পারে?
- কার্বন অফসেটিং: যাত্রীরা অতিরিক্ত চার্জ দিয়ে বৃক্ষরোপণ বা পরিবেশ প্রকল্পে সহায়তা করতে পারেন।
- ইকো-ফ্রেন্ডলি এয়ারলাইন: বৈদ্যুতিক বা হাইব্রিড বিমানের দিকেও ঝুঁকছে কিছু এয়ারলাইন।
- সচেতনতা: প্রয়োজন ছাড়া উড়ান এড়িয়ে বিকল্প পরিবহন বেছে নেওয়া।