বছরে হাজার কোটি পোশাক তৈরি হচ্ছে তাতে বাড়ছে স্টাইল
প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৫, ১১:৪৩:২১
বছরে হাজার কোটি পোশাক তৈরি হচ্ছে তাতে বাড়ছে স্টাইল, কিন্তু ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ। নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে ফ্যাশন খাতের বিপজ্জনক রূপ।
ফ্যাশন শুধু চোখের নয়, কার্বনের বোঝাও বইছে!
গ্লোবাল ফ্যাশন ইনডাস্ট্রি আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শিল্পখাত। কিন্তু এর বিপুল উৎপাদন, রাসায়নিক ব্যবহার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতা একে পরিণত করেছে পরিবেশ ধ্বংসের অন্যতম কারণ হিসেবে। জাতিসংঘের UNEP-এর মতে, বিশ্বজুড়ে ফ্যাশন খাত একাই কার্বন নিঃসরণের প্রায় ১০% এর জন্য দায়ী। যা বিমান ও জাহাজ চলাচলের সম্মিলিত নিঃসরণের চেয়েও বেশি।
‘ফাস্ট ফ্যাশন’ বনাম পৃথিবীর ভবিষ্যৎ
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘ফাস্ট ফ্যাশন’ নামক উৎপাদন ও বিপণনের প্রবণতা আজ পরিবেশের জন্য বড় হুমকি। প্রতি সপ্তাহে নতুন কালেকশন, সস্তা দামে বিক্রি এবং ক্রেতার ‘বারবার কেনা’ অভ্যাসের ফলে:
- পোশাক শিল্পে জ্বালানিভিত্তিক উৎপাদন বাড়ছে
- পানি ও রাসায়নিক ব্যবহার মারাত্মক হারে বাড়ছে
- প্রতিদিন টনকে টন পোশাক ডাম্পিং হচ্ছে
বিশ্বে প্রতি বছর ৯২ মিলিয়ন টন টেক্সটাইল বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার একটি বড় অংশ পোড়ানো বা মাটিচাপা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের চিত্র: বিশ্বমঞ্চে গৌরব, পরিবেশে চাপ
বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। শিল্পের বিস্তার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করলেও পরিবেশে তৈরি করেছে চ্যালেঞ্জ:
- গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ ব্যবহার
- রাসায়নিক পানির বর্জ্য নদীতে ফেলা
- কার্বন ফুটপ্রিন্ট বেড়ে যাওয়া
- পুরাতন টেক্সটাইল রিসাইক্লিং না হওয়া
বিজিএমইএ-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪৫০টির বেশি গ্রিন ফ্যাক্টরি থাকলেও, সামগ্রিক উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব কারখানার অনুপাত এখনও কম। পরিবেশ গবেষক ইঞ্জিনিয়ার মেহজাবিন সুলতানা বলেন, “আমরা উন্নয়ন চাই, কিন্তু তার খরচ যদি হয় নদী, বায়ু ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তা—তাহলে সেই উন্নয়ন কাদের জন্য?” তিনি বলেন, “ফ্যাশন খাতকে টেকসই ও কার্বন-নিরপেক্ষ করার উদ্যোগ নিতে হবে এখনই। না হলে এই শিল্পই একদিন আমাদের নিঃশ্বাস কেড়ে নেবে।”
সমাধান কোথায়?
- পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাপড় ব্যবহার ও রিসাইক্লিং প্রচলন
- টেকসই পোশাকের জন্য সচেতন ভোক্তা তৈরি
- উৎপাদন ও রপ্তানিতে কার্বন রেগুলেশন বাধ্যতামূলক করা
- পোশাক রপ্তানির শর্তে পরিবেশ মানদণ্ড সংযুক্ত করা