নীল জলরাশি আর প্রবালপ্রাচীরের অনন্য সৌন্দর্যে সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ।
 
                            প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ৯:০১:৪০
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। বছর জুড়ে হাজারো পর্যটক ভিড় জমালেও এর ভেতরেই লুকিয়ে থাকে পরিবেশ বিপর্যয়ের ভয়। অবাধ পর্যটন, প্লাস্টিক দূষণ ও প্রবাল ধ্বংস-সব মিলিয়ে দ্বীপটি একসময় হারানোর শঙ্কায় পড়েছিল। তবে এবার সরকারের মহাপরিকল্পনা দ্বীপকে নতুন করে সাজানোর আশা জাগাচ্ছে। পর্যটন করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে একটি “সেন্ট মার্টিন মাস্টার প্ল্যান”। এতে পরিবেশ সুরক্ষা, সীমিত পর্যটন, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং স্থানীয় জনগণের জীবিকা উন্নয়ন-সবই অন্তর্ভুক্ত।
পরিকল্পনার মূল দিকগুলো
১. সীমিত পর্যটন: দিনে নির্দিষ্ট সংখ্যক পর্যটক প্রবেশের ব্যবস্থা।
২. পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো: সৌরবিদ্যুৎ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্লাস্টিক নিষিদ্ধ।
৩. প্রবাল সংরক্ষণ: প্রবালপ্রাচীর ও সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষায় বিশেষ অঞ্চল নির্ধারণ।
৪. স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা: মৎস্যজীবী ও বাসিন্দাদের বিকল্প জীবিকা, যেমন ইকো-ট্যুরিজম ও হস্তশিল্প।
পরিবেশবিদ ড. নওশীন জাহান বলেন, “এই পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে সেন্ট মার্টিন শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার এক অনন্য ইকো-ট্যুরিজম মডেল হতে পারে।”

বিশ্বের অনুপ্রেরণা
মালদ্বীপ, বালি কিংবা থাইল্যান্ড-এসব দেশ তাদের দ্বীপভিত্তিক পর্যটনকে পরিবেশবান্ধব করে তুলেছে। মালদ্বীপে ‘এক দ্বীপ এক রিসোর্ট’ নীতি যেমন কাজ করেছে, তেমনি থাইল্যান্ডে নির্দিষ্ট মৌসুমে পর্যটন সীমিত করা হয়েছে প্রবাল রক্ষায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন প্রকল্পও সেই ধারা অনুসরণ করতে পারে।

চ্যালেঞ্জ ও আশা
অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা টিকিয়ে রাখা-সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সরকার বলছে, উন্নয়ন আর পরিবেশের ভারসাম্য রেখে এগোতেই এই মহাপরিকল্পনা। স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল হক জানালেন, “যদি সত্যিই কাজগুলো বাস্তবায়ন হয়, তাহলে আমাদের জীবিকারও উন্নতি হবে, আর দ্বীপটাও বাঁচবে।”
“সেন্ট মার্টিন শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার এক অনন্য ইকো-ট্যুরিজম মডেল হতে পারে।” —ড. নওশীন জাহান, পরিবেশবিদ