পরিবেশ সংরক্ষণ ও দেশের স্বার্থ রক্ষায় প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তির খসড়া নাকচ
 
                            প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ৭:২৯:৩৩
প্রস্তাবিত গ্লোবাল প্লাস্টিকস চুক্তির সবশেষ খসড়া বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং প্লাস্টিক দূষণরোধে আরও কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। জাতিসংঘ পরিবেশ পরিষদের প্রস্তাব ৫/১৪ অনুসারে আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি প্রণয়নের যে ম্যান্ডেট রয়েছে, খসড়াটি তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে-এই মত জানিয়েছে বাংলাদেশ।
১৩ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত প্লাস্টিক দূষণবিষয়ক আন্তঃসরকারি আলোচনা সভা (INC-5.2)-এর দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশের এই অবস্থান প্রকাশ করা হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, খসড়াটি দুর্বল ও অপর্যাপ্ত; এতে সরবরাহপক্ষীয় পদক্ষেপ বাদ রয়েছে, প্লাস্টিকের সম্পূর্ণ জীবনচক্র, স্বাস্থ্য প্রভাব, ক্ষতিকর রাসায়নিক, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অগ্রাধিকার ও আন্তঃসীমান্ত দূষণ রোধে বাধ্যতামূলক ব্যবস্থার কোনও উল্লেখ নেই। কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য নির্ভরযোগ্য উপায়ও নেই; বরং জটিল ও স্বেচ্ছাসেবী পদ্ধতির ওপর নির্ভর করা হয়েছে, যা বৈশ্বিক সংকটের গুরুত্বকে উপেক্ষা করে।
বাংলাদেশ জোর দিয়ে বলেছে, চুক্তির মূল অংশে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর রাসায়নিক, নিঃসরণ ও প্রাথমিক উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। খসড়া মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর নয়; এটি শুধুমাত্র বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাঠামো প্রদান করে এবং উৎপাদকদের দায়মুক্ত রাখে। সবচেয়ে ক্ষতিকর প্লাস্টিক পণ্য বন্ধে কোনো বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ নেই। অর্থবহ সংশোধন ছাড়া খসড়াটি সমর্থনযোগ্য নয় এবং জাতিসংঘ পরিবেশ পরিষদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
একই দিনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারত্ব ও লক্ষ্যভিত্তিক সম্পদের আহ্বান জানান। জেনেভায় অনুষ্ঠিত আইএনসি-৫.২-এর এক অনানুষ্ঠানিক মন্ত্রিপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি নিম্নপ্রবাহী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে আন্তঃসীমান্ত প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বৈশ্বিক কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
তিনি সার্কুলার অর্থনীতি মডেল প্রচার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর বন্ধ, টেকসই পণ্যের নকশা উন্নয়ন এবং বর্জ্য খাতের শ্রমিকদের ন্যায্য রূপান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও পরিবেশ ও স্বাস্থ্য উভয় ক্ষেত্রেই প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে তিনি ক্ষতিকর প্লাস্টিক পর্যায়ক্রমে বন্ধে উচ্চাভিলাষী ও সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।